পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৯
কিছু কথা

 আমরা সুনিশ্চিত লক্ষ্যে পৌঁছতে চাই, সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে চাই, তাদেরকে আমাদের চিন্তার শরিক করতে চাই। আমরা যুক্তির বলে প্রতিটি অলৌকিক ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে, প্রতিটি অলৌকিকবাবা ও জ্যোতিষীদের মুখোশ খুলে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাই প্রতিটি অলৌকিক ক্রিয়াকলাপের রহস্য উন্মোচনের সঙ্গে সঙ্গে সেই জ্ঞানের সন্ধান সর্বসাধারণকে জানাতে নানা উদ্যোগ ও পরিকল্পনা নিয়েছি। মানুষের আহ্বানে হাজির হতে চাই জ্যোতিষ, অলৌকিক, ধর্মসহ কুসংস্কার-বিরোধী আলোচনাচক্রে, শিক্ষণ-শিবির পরিচালনায়, পদযাত্রায়। মানুষের দরবারে হাজির হতে চাই আমাদের নাটক, প্রতিবেদন ও বই-পত্তর নিয়ে। রেখেছি একটি ঘোষণা—কোনও অবতার বা জ্যোতিষী তার ক্ষমতার প্রমাণ দিতে পারলে দেব পঞ্চাশ হাজার টাকা। ভেঙে দেব ‘ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’। চাই, এই ঘোষণার মধ্যে দিয়ে মানুষ বুঝতে শিখুক, অলৌকিক ও জ্যোতিষশাস্ত্রের অস্তিত্ব শুধু কল্পনায় ও বইয়ের পাতায়। চ্যালেঞ্জ গ্রহণের বা চ্যালেঞ্জ জানাবার ধৃষ্টতা যারা দেখিয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের নতজানু হতে হয়েছে।

 ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি সহযোগী সংস্থার সমন্বয়কারী হিসেবে এবং নিজের শাখা সংগঠনগুলোকে নিয়ে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী আন্দোলনের মূল স্রোতে কাজ করছে। এই আন্দোলনেরই এক উল্লেখযোগ্য পর্যায় হল—‘চ্যালেঞ্জ’। প্রচার ও বিজ্ঞাপনের দৌলতে যে গরুগুলো গাছে চড়ে বসেছে, তাদের মাটিতে নামিয়ে এনে আবার ঘাস খাওয়ানোর জন্যেই এই ‘চ্যালেঞ্জ’। দোদুল্যমান, সুবিধাভোগী ও ইর্ষাকাতরদের কাছে ‘চ্যালেঞ্জ’ ‘অশোভন’ মনে হতেই পারে, কেন না চ্যালেঞ্জ বাস্তব সত্যকে বড় বেশি রকম স্পষ্ট করে তোলে। কিন্তু, সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় প্রশ্ন এটাই—যেখানে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেই দাবি প্রমাণ করা যায়, বাস্তব সত্যকে জানা যায়, সেখানে চ্যালেঞ্জ গ্রহণে দ্বিধা থাকবে কেন?

 আমরা চাই আমাদের বিস্তার। আমাদের শাখা বিস্তার করতে চাই সেখানেই, যেখানে রয়েছে মানুষ। বিভিন্ন সংস্থাকে, মানুষকে পেতে চাই সংগ্রামের সহযোগী হিসেবে।

 এবার আমি সেইসব মানুষদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, যাঁদের প্রতিটি চিঠি, প্রতিটি যোগাযোগ, প্রতিটি আর্থিক সাহায্য, প্রতিটি উপদেশ, প্রতিটি সহযোগিতা আমাকে এবং আমাদের সমিতিকে প্রেরণা দিয়েছে, উৎসাহ দিয়েছে। গভীর বিশ্বাস সৃষ্টি করেছে—আমি পারছি, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পারছি। আন্দোলন দানা বাঁধতে শুরু করেছে। এত দ্রুত আমরা যে সংখ্যায় এত বিশালভাবে বৃদ্ধি পাব, তা আমার সুখ কল্পনাতেও ছিল না। অবাক বিস্ময়ে দেখেছি, যখনই আক্রান্ত হয়েছি, দুর্বার জন-রোষ আক্রমণকারীদের ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। যুক্তিবাদী আন্দোলনের একমাত্র শক্তি মানুষের ঘুম ভাঙার গানে দিশা