পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
১৮৭
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
১৮৭

১৮৭ কলকাতায় জীবন্ত শীতলাদেবী ও মা দুর্গা ১৯৬৮-৬৯ সাল নাগাদ আমাদের কলকাতার বুকে শম্ভুনাথ পণ্ডিত রােড় ও রূপনারায়ণ নন্দন লেন-এর মােড়ে শীতলা মন্দিরের শীতলামূর্তি হঠাৎ জীবন্ত হয়ে উঠলেন। মায়ের চোখ দিয়ে ঝরতে লাগল জল, মা কাঁদছেন। অন্ধ ভক্তের অভাব হলাে না। প্রণামীর টাকায় ঘন-ঘন থালা ভরে উঠতে লাগল। শহর কলকাতায় ঘটনাটা এতই উত্তেজনা, ধর্মোন্মাদনার সৃষ্টি করেছিল যে, পত্রিকাতেও খবর বেরিয়ে গেল। কিছু যুক্তিবাদী অনুসন্ধিৎসু লােক কার্যের পেছনে কারণটা খুঁজে বার করার চেষ্টা করতেই মা শীতলার পুরােহিত ব্যবসা গােটালাে। গত শতকের নয়ের দশকের গােড়ায় দক্ষিণ কলকাতার হরিশ মুখার্জি রােডের ২৩ পল্লীর দুর্গাপুজো নিয়ে কলকাতা তথা সারা বাংলাদেশে কম হৈ-চৈ হয়নি। দুর্গাঠাকুর বিসর্জন দিতে গিয়ে দেখা গেল মা কাদছেন। মা বিদায় নিতে কাদছেন, অতএব বিসর্জন হয় কী করে? বিসর্জন বন্ধ রইল। সারা শহর তােলপাড়, পত্রিকায় খবর পড়ে ঈশ্বরে ও অলৌকিকে বিশ্বাসীরা নতুন প্রেরণা পেলেন। কলিযুগেও তবে আবার মায়ের আবির্ভাব হলাে। প্রতিদিনই কাতারে কাতারে লােকের ভিড়। মা দুর্গার চোখের জল আর শুকোয় না, বিসর্জনও হয় না। একটু একটু করে রহস্যের পরদা উঠল, ব্যাপারটা নাকি পুরােপুরি জমি দখলের চক্রান্ত। উদ্দেশ্য, বেদখল জমিতে পাকাপাকি একটা মন্দির তৈরি। ঘটনাটা ফাস হতেই অলৌকিক খেলা সাঙ্গ করে মা দুর্গাকে বিসর্জন দেওয়া হলাে। জব্বলপুরে জীবন্ত দুর্গা মা দুর্গাই আবার সারা দেশের খবর হয়ে দাঁড়ালেন, এবারের ঘটনাস্থল জব্বলপুর। সাল ১৯৮২। ২৯ অক্টোবর ভেড়াঘাটে নর্মদা নদীতে শ্রীভবানী মণ্ডল দুর্গোৎসব কমিটির দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হলাে, জলে ফেলতে প্রথমে প্রতিমা ডুবে গিয়েছিল, কিন্তু একটু পরেই দেখা গেল কিছুটা দূরে, নর্মদার ডান তীরে প্রচণ্ড স্রোতের মধ্যেও সােজা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন দুর্গা প্রতিমা। প্রতিমা তীব্র স্রোতকেও উপেক্ষা করে অনড় হয়ে রয়েছেন। নর্মদার তীব্র স্রোত ভেসে চলেছে মা দুর্গার পা ধুয়ে। | কিছুক্ষণের মধ্যেই মা দুর্গার এই অলৌকিক কাহিনি শহরে ছড়িয়ে পড়ল। সেই রাতেই হাজারে হাজারে লােক এসে হাজির হলাে এই অলৌকিক দৃশ্য দেখতে। পরের দিন, ৩০ অক্টোবর ভেড়াঘাটে তিলধারণের জায়গা রইল না। বিভিন্ন রুট থেকে বাস সরিয়ে ভেড়াঘাটে অনবরত বাস যাচ্ছে আর আসছে। ভেড়াঘাট বিরাট একটা মেলার রূপ পেল। নানা রকমের দোকান, খাবার, ফুল, ফলের দোকানেই