পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২০০
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খন্ড)
২০০

________________

২০০ অলৌকিক নয়, লৌকিক (প্রথম খণ্ড) সুপার-ফ্লপ ভক্ত-সমাগম, অন্য জায়গা থেকে মাটি এনে খেজুরতলায় ফেলার কাহিনি। এখন মানুষ আর মাটি খেতে যায় না। | পক্ষিতীর্থমের অমর পাখি ‘পক্ষিতীর্থম’ দক্ষিণ ভারতের একটি প্রখ্যাত ধর্মস্থান। মাদ্রাজ থেকে প্রায় ৫৫ কিলােমিটার দূরে থিরুকালিকম নামে একটা জায়গায় পাহাড়ের ওপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে পক্ষিতীর্থ মন্দির। প্রতিদিন বেলা এগারােটা থেকে বারােটা নাগাদ একটি বা দুটি পাখি উড়ে আসে পক্ষিতীর্থে। পুরােহিতের নিবেদন করা ভাত, ময়দা, ঘি ও চিনিতে তৈরি খাবার খেয়ে আবার ওরা উড়ে চলে যায়। পুরােহিত বলেন, প্রতিদিন এই পক্ষিদেবতা বা দেবতারা উড়ে আসেন সুদূর বারাণসী থেকে, নিবেদিত খাদ্য গ্রহণের পর আবার ফিরে যান বারাণসীতে। পুরােহিতেরা আরও বলেন, এই পক্ষিদেবতারা অমর। যুগ-যুগান্ত ধরে তারা এমনি করেই প্রতিদিন উড়ে এসে পুজো গ্রহণ করে আবার ফিরে যান। এরা নাকি পৌরাণিক যুগের পাখি। দীর্ঘকাল আগেই নাকি এই জাতীয় পাখি পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। জীব মাত্রেই মরণশীল—এই তত্ত্ব পক্ষিদেবতাদের বেলাতে খাটে না। পুরােহিতদের প্রতিটি কথাকে অভ্রান্ত সত্য বলে ধরে নেওয়ার মতাে ভক্তের অভাব নেই আমাদের দেশে। তারা পক্ষিতীর্থের পক্ষিদেবতার অলােকিকত্বকে স্বীকার করে নিয়ে পরম ভক্তির সঙ্গে পুজো দিতে যায়। অনেক মানুষই অলৌকিক কোন কিছুকে দেখতে আগ্রহী, অলৌকিকে বিশ্বাস করতে আগ্রহী। তাই, অস্বাভাবিক কোন কিছু দেখলেই অন্ধ বিশ্বাসে তাকেই অলৌকিক বলে ধরে নেয়। পাখিদের ঠিক একই সময়ে উড়ে আসা এবং খাবার খাওয়ার মধ্যে কিছুটা অস্বাভাবিকতা থাকলেও অসম্ভব কিছু নয়। আপনার বাড়ির আশেপাশের কাকদের নিয়ম করে কিছুদিন দিনের যে কোন একটা নির্দিষ্ট সময়ে খাবার দিতে থাকুন, কয়েকদিন পরেই দেখবেন, ঠিক খাবার দেওয়ার সময় কাকেরা এসে হাজির হচ্ছে। আমার স্ত্রী এক সময় প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে ন'টার মধ্যে একটা কাক ও একটা চড়ুইকে নিজের হাতে খাওয়াতাে। প্রতিদিন ঠিক ওই সময়ে পাখি দুটো এসে হাজির হতাে এবং ডাকাডাকি হাঁকাহাঁকি শুরু করে দিত। বেশি চেঁচামেচি করলে আমার স্ত্রী ধমক দিত। ওরাও বকুনি খেলে দিব্যি বুঝদারের মতাে চুপ করে যেত। পাখিদের এই ধরনের ব্যবহারের কারণ হলাে অভ্যাস বা ট্রেনিং।