পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পীঠস্থান ও স্থান মাহাত্ম্য রহস্য
২১১

ডিসেম্বরে এক শান্ত-শীতল দিনে মিয়ামির উপকূল থেকে মাত্র এক মাইল দূরে ‘কেবিন ক্রুজার উইচক্র্যাফট’ জাহাজ দুটি রহস্যজনকভাবে হঠাই বেপাত্তা হয়ে গেল। শান্ত সমুদ্রে উপকূলের এত কাছে আচমকা নিখোঁজ হওয়ার পেছনে কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণ ছিল না। তবে কেন নিখোঁজ হল? কী সেই রহস্য?

 পলিমােড প্রােগ্রামের অনুসন্ধানকারীরা আমেরিকান নৌবাহিনীর সীমান্তরক্ষীদের রেকর্ড থেকে জানতে পারেন, সে-দিন সামুদ্রিক ঝড়ে সমুদ্র ছিল উত্তাল। ‘কেবিন ক্রুজার’ থেকে একসময় রেডিও বার্তায় বার-বার ঘােষণা করা হতে থাকে ঝড়ে তাদের প্রপেলারটি ক্ষতিগ্রস্ত। জাহাজটি অশান্ত বিক্ষুব্ধ সমুদ্রে অসহায়ভাবে ভেসে বেড়াচ্ছে। ডুবে যাওয়ার আগে পর্যন্ত জাহাজ থেকে সাহায্যের আবেদন পাঠানাে হয়।

 সামুদ্রিক ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজের ডুবে যাওয়ার মধ্যে অলৌকিক বা রহস্যময় কিছু নেই। বার্লিৎজ তাঁর কাহিনিকে চটকদার করার জন্য বিক্ষুব্ধ সমুদ্রকে শান্ত করেছিলেন। আর, তাইতেই যত রহস্যময়তার সৃষ্টি।

 বইটিতে আরও একটি ঘটনায় বলা হয়—জাপানি ট্যাংকার ‘রাইফুকু মারু’ বার্মুডা ট্র্যাঙ্গেল থেকে এস. ও. এস. পাঠিয়ে শান্ত সমুদ্রে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায়।

 অনুসন্ধানকারীদের অনুসন্ধানে জানা যায় জাপানি ট্যাংকারটি শেষ রেডিও বার্তা পাঠিয়েছিল তা গ্রাহক স্টেশনের রেডিও লগ বইতে লেখা আছে। বার্তাটি ছিল, ‘এখন খুব বিপদ, শীগগির এসাে।’ এস, ও, এস, পাবার পর একটি উদ্ধারকারী জাহাজ দ্রুত রওনা হয় এবং ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখতে পায় ঝড়ে উত্তাল সমুদ্রে ট্যাংকারটি ডুবে গেছে। উত্তাল সমুদ্রে জাহাজডুবি কোনও অলৌকিক ঘটনা নয়।

 বার্মুডা ট্র্যাঙ্গেলের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ মাথার চুল খাড়া করা কাহিনি হল—১৯৪৫-এর ডিসেম্বরে ছ’টি বিমানের অকস্মাৎ নিরুদ্দেশ। ঘটনাটিকে নিয়ে নাকি সেই সময় পৃথিবী জুড়ে শােরগােল পড়ে গিয়েছিল।

 বইটির কাহিনিতে বলা হয়েছে—১৯৪৫-এর ৫ ডিসেম্বর আমেরিকার ফোর্ট-লউভার এল ন্যাভাল বিমান বন্দর থেকে মার্কিন নৌবাহিনীর পাঁচটি অ্যাডভেঞ্চার বােমারু বিমান চোদ্দজন আরােহী নিয়ে পরিষ্কার দিনের আলােয় আকাশে ওড়ে। রুটিন মাফিক প্রশিক্ষণে বেরিয়ে ছিলেন তাঁরা। দিনের বেলা, আকাশ ছিল সম্পূর্ণ পরিষ্কার। রুটিন ওড়ার শেষে অবতরণের আর মাত্র পনেরাে মিনিট বাকি। বিমানবন্দরের কণ্ট্রোল-টাওয়ার চোদ্দজন বৈমানিকের দলনেতা লেফটেন্যাণ্ট চার্লস টেলরের কাছ থেকে বিপদ বার্তা পেলেন। টেলরের গলার স্বরে প্রচণ্ড আতঙ্ক। তিনি জানালেন, “আমরা বােধহয় পথ থেকে সরে এসেছি। আমরা মাটি দেখতে পাচ্ছি না। জানি না কোনটা কোনদিক। সবকিছু উলটো পালটা লাগছে... এমনকি সমুদ্রটাকেও যেমন দেখাবার কথা সে-রকম লাগছে না... মনে