পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরামনােবিদ্যা ও অতীন্দ্রিয় উপলব্ধি
২১৯

কার কী জিজ্ঞাসা আছে এবং তাঁর নাম, ধাম পরিচয়ই বা কী, তাও আগে ভাগে বলে দিতে পারেন।

 তাঁদের কেউ কেউ অধীত শক্তির পরিচয় দিলেন। সঠিক উত্তর না পেয়ে দর্শকদের মধ্যে থেকে অনেকে অসন্তোষ প্রকাশ করতেও ছাড়লেন না। বাবারা অবশ্য নির্বিকার। সন্দেহকারীদের দিকে কৃপার দৃষ্টি হেনেছেন শুধু। ভাবখানা যেন, আমাকে পরীক্ষা করতে এসেছ?

 অবিশ্বাসের গােড়াপত্তন কিন্তু আলােচনাচক্রের শুরু থেকেই। কৃষি দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী যােগেন্দ্র মাকোয়ানা ভগবান বিষ্ণুর ছবিতে মালা দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে উদ্বোধনী ভাষণ শুরু সুলেন এভাবে—“অবিশ্বাসী হলেও খােলা মন নিয়ে আমি এসেছি, কারণ দেশের অনেক ঋষি-মহর্ষিই এক সময় আমাকে ভগবান দর্শনের জন্য মন্দিরে ঢুকতে দেননি। আমি নাকি অচ্ছুৎ। ঈশ্বর দর্শন করতে তাই আমি মন্দিরে যাই না। যে-সব বাবা এখানে এসেছেন, তাঁরা নাকি ঈশ্বরের কাছে পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁরা নাকি অতীন্দ্রিয় শক্তির অধিকারী। বিশ্বাস আমি করি না, তবে মন খােলা রেখেছি। বিশ্বাস করলে বলে যাব। আমি বিজ্ঞানে বিশ্বাসী, বুজরুকিতে নই।”

 মাকোয়ানার এই কথায় যেন অগ্নিতে ঘৃতাহুতি পড়ল। মঞ্চে বসা পাইলট বাবা, বালতি বাবার চোখ জ্বলে উঠল। বিচারপতি ভি কৃষ্ণ আয়ার পাক্কা সাতান্ন মিনিট ধরে প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন, পরাবিদ্যা ও অতীন্দ্রিয় শক্তি নিয়ে শুধু ভারতেই নয়, সারা পৃথিবী জুড়ে আজ চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। পরীক্ষা চলছে রাশিয়া-আমেরিকার মতাে বিজ্ঞানে উন্নত দেশগুলিতেও। তিনি জানালেন, অতীন্দ্রিয় শক্তির প্রয়ােগেই জর্জিয়ার এক মহিলা অসুস্থ রুশ প্রেসিডেণ্ট ব্রেজনেভকে দীর্ঘ স্বস্তি দিয়েছিলেন। রুশরা এই পরাবিদ্যাকে বলছে বায়াে-এনার্জি। এটা শুধু বিজ্ঞান-নির্ভর নয়, পুরােপুরি বিজ্ঞান।

 বক্তৃতায় আর মন ভরছে না। সুবেশা মহিলারা আসনে এগিয়ে বসেছেন আগ্রহে; বাবাদের কৃপাপ্রার্থী তাঁরাই বেশি। অতঃপর বালতি বাবার ক্ষমতা দেখানাে শুরু হল। পাঁচজন সাংবাদিক, পাঁচজন মহিলা ও পাঁচজন সাধারণ দর্শক নির্দিষ্ট হলে একটি করে প্রশ্ন মনে মনে তাঁরা ভাববেন। উনি বলে দেবেন কে কী ভেবেছে। কীভাবে?

 মঞ্চে একটা বালতি এল। তাতে পরিমাণমতাে জল ও দুধ ঢাললেন তিনি। সাদা কাগজ ফেলে দিলেন তাতে। বালতির মুখ চাপা দিলেন খবরের কাগজ দিয়ে। অল্পক্ষণ মুদ্রিত নেত্রে ধ্যান। তারপর হাত ঢুকিয়ে সেই সাদা কাগজ বের করা হবে। তাতে লেখা থাকবে প্রশ্নকর্তার নাম ও উত্তর।

 নির্দিষ্ট সাংবাদিকদের মধ্যে আমি ছিলাম। প্রশ্ন ছিল মেহতা ও ইদ্রিস হত্যার প্রকৃত রহস্য উদ্‌ঘাটন হবে কি না। বালতিবাবা কোন উত্তর কিন্তু দেননি। পাশে