পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
Psycho-kanesis বা Pk (মানসিক শক্তি)
২৬১

পাওয়ার অভিজ্ঞতা অল্প-বিস্তর আছে। আমাদের দেশে ট্রেন সময় মেনে চলে না, সুতরাং এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটা আদৌ অলৌকিক বা অসম্ভব পর্যায়ে পড়ে না।”

 আমার মন্তব্যে শ্রীপরেশ চক্রবর্তী বলেছিলেন, তিনিই তাঁর অতীন্দ্রিয় শক্তির পরিচয় দিতে পারেন চলন্ত ট্রেন আটকে দিয়ে।

 আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, “চলন্ত ট্রেন আটকাতে হবে না, আমি একটা সাইকেল চালাব। আপনি আপনার অতীন্দ্রিয় শক্তিতে সাইকেলটা থামাতে পারবেন?”

 —“না, সাইকেল নয়, ট্রেন থামিয়েই তোমাদের আমি দেখাব।” শ্রীচক্রবর্তী বলছিলেন। আমি বলেছিলাম, “আপনি যে পদ্ধতিতে ট্রেন থামাবেন, আমিও সেই পদ্ধতিতেই ট্রেন থামাব। কারণ, জানেনই তাে, আমার একটা বিশ্রী অভ্যেস আছে, কেউ অলৌকিক কিছু দেখালে আমিও সেটা দেখাবার চেষ্টা করি।”

 না; আজ পর্যন্ত পরেশ চক্রবর্তী ট্রেন বা সাইকেল কোনটারই গতি ইচ্ছাশক্তিতে রুদ্ধ করে দেখাননি। তবে আমি কিন্তু একবার ছােট্ট একটা কৌশলে ট্রেন থামিয়ে অলৌকিক বিশ্বাসী বন্ধুদের চমকে দিয়েছিলাম। কৌশলটা হলাে, পরীক্ষক বন্ধুদের অপরিচিত আমার এক বন্ধু ট্রেনের কম্পার্টমেণ্ট থেকে একটা সুটকেশ বাইরে ফেলে দিয়ে চেন টেনেছিল।

 আর একবার কলকাতার বুকে আমার ইচ্ছাশক্তিতে মােটর গাড়ি থামিয়ে বন্ধুদের বিস্মিত করছিলাম, কেউ বুঝতেই পারেননি, চালকের সঙ্গে আমার বােঝাপড়া ছিল।

খড়গপুরের সেই পীর

এবার যে ঘটনাটার কথা বলছি, সেটা ঘটেছিল খড়্গপুর স্টেশনে। তখন আমি নেহাতই বালক। ইন্দার কৃষ্ণলাল শিক্ষানিকেতনে পড়ি। রাম নবমীতে ট্রাফিক সেটেলমেণ্টের লাগােয়া ‘বড়া লাইট কা নীচে’ জি.ভি. রাওয়ের ম্যাজিক দেখি। ক্লাশে টিচার শুভেন্দু রায়ের কাছে গল্প শুনি, শােষক আর শােষিতদের। পাঁচ ভাই- বােনের সংসারে বেড়ে উঠছি আগাছার মতােই। খেলা বলতে ছিল সুশীল রায়চৌধুরীর ওখানে বক্সিং শেখা। আর নেশা বলতে অলৌকিক শক্তির খোঁজে সাধুসন্ত-পীরদের পেছনে দৌড়নাে। তখন এই সব অলৌকিক-বাবাদের ভিড়ও থাকত বটে খড়্গপুরে। জানি না এখন কেমন। গুরুজি বাবাজি আর পীরদের রমরমা এবং অন্ধ সংস্কারে পাকখাওয়া মানুষের ভিড়ে বহু জাতি, বহু ভাষা-ভাষীদের শহর খড়্গপুর সবসময় যেন ভাবাবেগে ভেসে যেত। কখনও শুনতাম কাকে না কি মা শীতলা ভর করেছে, কখনও শুনতাম পাড়ার কোন মহিলা মা মনসার আশীর্বাদ পেয়ে স্বপ্নে পাওয়া ওষুধ দিচ্ছে। কখনও বা কারও বাড়ির গুরুদেব শূন্যে হাত ঘুরিয়ে পেঁড়া এনে আমাকে