পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮০
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)

 আমাদের পশ্চিমবাংলার শহর, শহরতলী ও গ্রামে-গঞ্জে বিভিন্ন পুজো উপলক্ষে বসা মেলাতে বিদ্যুৎ-কন্যার প্রদর্শনীয় হয়। একটি মেয়ের শরীরে বাল্ব ছুঁইয়ে আলাে জ্বালানাে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাপক বেশি পয়সা রােজগারের জন্য বিদ্যুৎ-কন্যাকে অলৌকিক ক্ষমতাধারী বলে প্রচার করলেও প্রতিটি ক্ষেত্রেই এঁরা বিজ্ঞান এবং বিদ্যুৎ-এর ধর্মকে কৌশল হিসেবে কাজে লাগিয়ে আলাে জ্বালান। এই ধরনের বিদ্যুৎ তৈরিকে জাদু হিসেবে কৈশােরে দেখিয়েছি। তাই আপনাদের দাবির খবরটা পড়ে খবরের সত্যতা সম্বন্ধে আপনার কাছ থেকে জানতে একান্তভাবে আগ্রহী। আমার সন্দেহ হচ্ছে, আপনার গৃহীত একটা সাধারণ বৈদ্যুতিক কৌশলকে বােঝার ভুলে প্রচার মাধ্যমগুলাে এইভাবে প্রচার করেছে। এই বিষয়ে প্রেস ট্রাস্ট অফ ইণ্ডিয়াকে আপনি একটি চিঠি দিয়ে ভুল ভাঙিয়ে দিলে কুসংস্কারে আচ্ছন্ন একটি দেশের বহু লােকের মধ্যে গড়ে ওঠা আপনার সম্বন্ধে একটা ভুল ধারণার অবসান হবে।

 আপনি যদি সত্যিই এই অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী বলে দাবি করেন, তবে সেইক্ষেত্রে আপনার দাবিকে আরাে জোরাল করার জন্য আমাকে পরীক্ষা করতে দেওয়ার সুযােগ দিন।”

 চিঠির উত্তর আজ পর্যন্ত পাইনি।

 পত্রিকায় ‘অলৌকিক’ খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর আমাদের সমিতি বহু শত অনুষ্ঠানে শরীর থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করে দেখিয়েছে। নাটকীয়তা সৃষ্টি করিতে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিদ্যুৎ তৈরি করেছি কোনও দর্শকের শরীর থেকে। আমরাও কিন্তু বালব জ্বেলে থাকি সত্যপ্রকাশের মতােই গােপন ব্যাটারি সাহায্যে।

ভূ-সমাধি

 ১৯৭৩ সালে ভারতের একটি চিকিৎসা-বিজ্ঞান-সংক্রান্ত পত্রিকায় ডাঃ কোঠারি, ডাঃ গুপ্ত প্রমুখ তিনজন ডাক্তারের একটি পরীক্ষা বিষয়ে প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। প্রবন্ধটিতে বলা হয়, একজন যােগীকে মাটির নীচে ছােট একটি আধারে ৮০ দিন রেখে দেওয়া হয়েছিল। যােগী সমাধিস্থ অবস্থায় ৮০ দিন শ্বাস না নিয়েও বেঁচে ছিলেন। সমাধিস্থ যােগীর হৃৎপিণ্ড কেমন কাজ করে দেখার জন্য ডাক্তাররা যােগীর হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে E.C.G যােগাযােগ ব্যবস্থা করেন। দ্বিতীয় দিনেই দেখা যায় E.C.G কাজ করবে না অথচ হৃৎপিণ্ড কাজ করে যাবে। চোখের আড়ালে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে শুধুমাত্র বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে অতীন্দ্রিয় বলা যায় কী?

 এই একই পরীক্ষাকে বিজ্ঞানগ্রাহ্য করতে হলে যােগীকে আগা-গােড়া প্রতিটি তল কাচের তৈরি একটি ঘরে রাখতে হবে, যেখানে সকলে প্রতি মুহূর্তে যােগীকে দেখতে পাবে। কাচের ঘরে একটি মাত্র ছিদ্র থাকবে, যেটা দিয়ে ঘরকে বায়ুশূন্য