পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/২৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
২৯৪
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
২৯৪

________________

২৯৪ অলৌকিক নয়, লৌকিক (প্রথম খণ্ড) পরীক্ষা করে দেখি, দেখব—হাতের বা দেহের অংশটি কুয়াশাময় পদার্থকণা পরিপূর্ণ, চারিদিকে যেন তার ঝুলছে। সুতরাং যে দেহকে আমরা জড় পদার্থ বলি আসলে সেটা জড় নয়, তা মেঘের বা কুয়াশার মতাে এক পদার্থ বিশেষ।” (পৃষ্ঠা-৩২) । এখানেও কিন্তু স্বামী অভেদানন্দ বিজ্ঞানের সাধারণ নিয়মগুলােকে, না জেনেই অনেক কিছু লিখে ফেলে গােল পাকিয়েছেন। শরীরের হাড়, মাংস, পেশী ইত্যাদির ঘনত্বের বিভিন্নতার জন্য এক্স-রের ছবিতে সাদা-কালাে রঙের গভীরতারও বিভিন্নতা দেখা যায়। আর, এই রঙের গভীরতার বিভিন্নতাকেই ‘মেঘের মতাে কুয়াশার মতাে এক পদার্থ বিশেষ’ বলে ভুল করেছেন স্বামীজি। স্বামী অভেদানন্দের সুরে সুর মিলিয়ে ভারতের আত্মায় বিশ্বাসীরা আত্মাকে বায়বীয় বা কুয়াশার মতাে কিছু ভাবলেই বিশ্বের অন্যান্য দেশের আত্মায় বিশ্বাসীরা কিন্তু আত্মাকে বায়বীয় বলে মেনে নিতে রাজি নয়। মালয়ের বহু মানুষের বিশ্বাস আত্মার রঙ রক্তের মতােই লাল, আয়তনে ভুট্টার দানার মতাে। প্রশান্ত-মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের অনেকের ধারণা আত্মা তরল। অস্ট্রেলিয়ার অনেকেই মনে করেন আত্মা থাকেন বুকের ভেতর হৃদয়ের গভীরে, আয়তনে। অবশ্যই খুব ছােট্ট। অনেক জাপানীর ধারণা—আত্মার রঙ কালাে। একবার ভাবুনতাে, আত্মার চেহারাটা কেমন, তাই নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশবাসীর বিভিন্ন মত। অথচ স্বামী অভেদানন্দই এক জায়গায় বলেছেন, “আমাদের মনে রাখা উচিত যে, সত্য কখনও দুরকম বা বিচিত্র রকমের হয় না, সত্য চিরকালই এক ও অখণ্ড।” (পৃষ্ঠা-৩১) তবে কেন আত্মার গঠন নিয়ে বিভিন্ন ধর্মের সত্য বিভিন্ন ধরনের? কেন এক ও অখণ্ড নয়? বুঝতে অসুবিধে হয় না, এই বিশ্বাসগুলাে যার যার ধর্মের নিজস্ব বিশ্বাস। এই সব বিশ্বাসের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক সত্যের কোনও সম্পর্ক নেই। স্বামী অভেদানন্দ জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা এই কুয়াশার মতাে আত্মার অস্তিত্বকে স্বীকার করে নিয়েছেন, এবং ঐ “বস্তুটির নাম দিয়েছেন এক্টোপ্লাজম বা সূক্ষ্ম -বহিঃসত্তা। একটি বাস্পময় বস্তু এবং এর কোন একটি নির্দিষ্ট আকার নেই। একে দেখতে একখণ্ড ছােট মেঘের মতাে, কিন্তু যে-কোন একটি মূর্তি বা আকার এ নিতে পারে না।” (পৃষ্ঠা-২৮-২৯) দুটো কথা স্পষ্ট করে বলে নিই (১) বিজ্ঞান কুয়াশার মতাে আত্মার অস্তিত্বকে আদৌ স্বীকার করেনি। (২) বিজ্ঞান এই অস্তিত্বহীন কুয়াশার মতাে আত্মাকে এক্সোপ্লাজম’ নামে অভিহিত করেনি। এক্টোপ্লাজম’ (Ectoplasm) বলতে