পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩১৬
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
৩১৬

অলৌকিক নয়, লৌকিক (প্রথম খণ্ড) পরীক্ষা নিলেন। তারা ফ্রান্সিসের অফিসের সহকর্মীদের একটি গ্রুপ ছবি সংগ্রহ করে হাজির করলেন ছােট ছেলেটির কাছে। ওই ছবির কোনও সহকর্মীকেই চিনতে পারল না ছেলেটি। ফ্রান্সিসের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন ধর্মদাস। ধমর্দাসের কাছে হাজির করা হলাে ছেলেটিকে। না, এবারও চিনতে পারল না। ফ্রান্সিসের জীবনের ওপর ৭০টি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল, ৪টি মাত্র প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পেরেছিল ছেলেটি। গােটাটাই যে একটা সাজানাে ব্যাপার তা বুঝতে মােটেই অসুবিধে হয় । কাউকে ঠাকাবার ইচ্ছা থাকলে একজন মৃত ব্যক্তির সম্বন্ধে খুঁটিনাটি খবর জেনে নিয়ে সেগুলাে একটি বালক-বালিকাকে ভালােমতাে শিখিয়ে-পড়িয়ে তার অতীত জীবনের স্মৃতি বলে চালানাে মােটেই কঠিন কাজ নয়। আদিম মানুষের অজ্ঞতা থেকে সৃষ্টি হয়েছিল আত্মার, আর শাসক ও পুরােহিত সম্প্রদায়ের শােষণের সুবিধের জন্য সৃষ্টি হয়েছিল পূর্বজন্মের কর্মফল ও জন্মান্তরবাদ। জাতিস্মর তদন্ত ৪ : সুনীল দত্ত সাক্সেনা। সুনীল দত্ত সাক্সেনা আর এক বিশ্বখ্যাত জাতিস্মর। সুনীলের জাতিস্মর ক্ষমতার তথা প্রথম প্রকাশিত হয় ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় ১৯৬৪’র ৩ জানুয়ারি। সুনীলের জন্ম উত্তরপ্রদেশের ছােট্ট শহর আওনলায় ১৯৫৯-এর ৭ অক্টোবর। ১৯৬৩ সাল থেকে সুনীল নাকি জানাতে থাকে সে আগের জন্মে বুধায়ুন শহরের আদিবাসী ছিল। বুধায়ুন আওনলা থেকে মাত্র ৩৫ কিলােমিটার দূরে। সুনীলের বাবার সম্পর্কে কাকা এস. প্রসাদ বুধায়ুনের বাসিন্দা। তাঁর বাড়িতেই সুনীলকে আনা হয়। এখানে এসে এক এক করে সুনীল অনেক কথাই জানায়। সে ছিল বিশাল ধনী। বিশাল বাড়ি ছিল, ঘােড়া ছিল, মােটর গাড়ি ছিল, ফ্রিজ ছিল, ফ্যাক্টরি ছিল। কলে: ৮ষ্ঠা করছিল। কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন বন্ধু পাঠকজি। চার বিয়ে। তিন স্ত্রীর মৃত্যুর পর চতুর্থ বিয়ে। দুই ছেলে। একটি নিজের, একটি পােষ্য। চতুর্থ স্ত্রী জলে বিষ মিশিয়ে খাইয়েছিলেন। তাতেই মৃত্যু। আগের জন্মে ছিল কিষেণ। | সুনীলের জাতিস্মর ক্ষমতার খবর বুধায়ুনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল। সাধারণ মানুষের প্রধান আলােচনার বিষয় হয়ে দাঁড়াল সুনীল। তারা ধরে নিলেন কিষেণ বলতে সুনীল শেঠ শ্রীকৃষ্ণজিকেই বােঝাচ্ছে। শেঠ শ্রীকৃষ্ণজির মৃত্যু সুনীলের জন্মের আগেই। তিনি বুধায়ুনের বিশিষ্ট ধনী। কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অধ্যক্ষ পদে বসিয়েছিলেন বন্ধু পাঠকজিকে। তৃতীয় পত্নীর মৃত্যুর পর ১৯৪৩ সালে শেঠজি বিয়ে করেন যােড়শী সুন্দরী শকুন্তলাদেবীকে। শেঠজির দুই ছেলে। বড় দত্তকপুত্র শ্যামপ্রসাদ, ছােট তৃতীয় পত্নীর পুত্র রামপ্রসাদ। সুনীলের দেওয়া আর অনেক তথ্যই মিলে যাচ্ছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে সুনীলের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ১৯৬৪-র ডিসেম্বরে দুই পরামনােবিজ্ঞানী ইয়ান স্টিভেনসন এবং পি পাল সুনীলের বিষয়ে অসুসন্ধানে