পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২০
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)

ঘটেনি। কুল্লোর পরিচিতজনেরা ও দুই ছেলে প্রদীপকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের অনেকেই প্রশ্ন করছিল—আমাকে চিনতে পারছ?

 প্রদীপ একসময় উত্তর দিয়েছিল— তোমাদের প্রত্যেককে আমি চিনতে পারছি। সুধা জানিয়েছিলেন, প্রদীপ তাঁকে সুধা বলে চিনতে পেরেছিল—কথাটা ঠিক নয়। প্রদীপ জানিয়েছিল তার আগের জন্মের স্ত্রীর নাম সুধা।

 প্রশ্ন—আপনি কি প্রদীপকে কোনও প্রশ্ন করেছিলেন?

 উত্তর—হ্যাঁ, বিয়ের রাতে আমার স্বামী আমাকে যে আংটিটা দিয়েছিলেন, সেটা দেখিয়ে প্রদীপকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, বলো তো এটা কবে আমাকে দিয়েছিলে?

 প্রশ্ন—কি উত্তর দিল?

 উত্তর—আমার আংটিটা দেখে কোনও উত্তর না দিয়ে বলল— পরে বলব। কিন্তু আর বলেনি।

 রবিকান্ত ও প্রকাশ জানালেন—তাঁদের দু’জনকে প্রদীপ চিনতে পারেনি। কুল্লোর দুই ছেলের নাম বলেছে। এ তো সামান্য চেষ্টাতেই আগে থেকে জেনে নেওয়া সম্ভব। প্রদীপ আগের জন্মে বাবা ছিল, এমনটা মেনে নিতে দু’জনেরই ঘোরতর আপত্তি আছে।

 প্রতিবেদক সীতামাই গ্রামে প্রদীপের বাড়ি হাজির হয়েছিলেন মিথ্যে পরিচয়ে—কুল্লো লালার আত্মীয়।

 প্রদীপকে যখন প্রশ্ন করা হলো, “তোমার আগের জন্মের নাম কী ছিল?”

 “কুল্লো লালা, তাই নয়?” বলে প্রদীপ ওর মায়ের দিকে তাকাল “তোমার আগের জন্মের স্ত্রীর নাম কি ছিল?”

 “সুধা বলো সুধা।” মা ও বাবা প্রদীপকে উত্তর যুগিয়ে দিলেন। প্রদীপ বলল, “হ্যাঁ সুধা।”

 “যখন তুমি কুল্লো ছিলে তখন কোন কলেজে পড়তে মনে আছে? মথুরা কলেজ, না আলিগড় কলেজে?” প্রদীপ মায়ের দিকে তাকাল। প্রতিবেদকের আবার প্রশ্ন—“তুমি আলিগড় কলেজে পড়তে মনে পড়ছে না?”

 প্রদীপ উত্তর দিল, “হ্যাঁ মনে পড়েছে। আলিগড় কলেজে পড়তাম।”

 বাস্তবে কুল্লো ক্লাস ফোর পর্যন্ত পড়েছিলেন।

 ফেরার সময় প্রতিবেদক ১৯৮৭ সালের মডেলের মারুতিতে উঠতে উঠতে প্রদীপকে বলেছিলেন, “মনে পড়ছে, এই গাড়িটা তুমি আগের জন্মে নিজেই চালাতে?”

 প্রদীপ ঘাড় নেড়ে বলল, “হ্যাঁ, মনে পড়েছে।”

 বুঝুন? ১৯৮৭ সালের মডেল ১৯৮০ সালে মৃত কুল্লো চালাতেন?

 লালা পরিবারের প্রত্যেকেরই সন্দেহ প্রদীপকে কুল্লো বলে চালাবার পেছনে