পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৩৩৪
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)
৩৩৪

. ৩৩৪ অলৌকিক নয়, লৌকিক (প্রথম খণ্ড) স্বামী অভেদানন্দ ও প্রেত-বৈঠক একটা প্ল্যানচেটের আসরে বা প্রেত-বৈঠকের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছিলেন স্বামী অভেদানন্দ। প্রেত-বৈঠকটি বসেছিল পাশ্চাত্যের একটি দেশে, দেশটির নাম উল্লেখ করেননি স্বামী অভেদানন্দ। সেখানে তিনি অনুভব করেছেন, “অন্তত প্রেতাত্মাদের কুড়িটা হাত আমার পিঠের ওপর, অর্থাৎ কুড়িটা বিদেহীর হাত আমার পৃষ্ঠদেশ স্পর্শ করছে। কেউকেউ আমার জামার কলার কিংবা পকেট ধরে টানছে, অথবা একইসঙ্গে অনেকগুলাে হাত আমার পিঠে দিয়েছে। এসব আমি স্পষ্টভাবে অনুভব করেছি। তারপর একজন আত্মা হয়ত আমায় জিজ্ঞাসা করল : আপনি কি মনে করেন, যে, মিডিয়ামই এইসব ব্যাপার করছে? প্রেত-বৈঠকের ঘরটা একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢাকা ছিল, যদিও ঘরের কোণে কাঠের বাক্সে ঢাকা একটা আলাে মিটিমিট করে জ্বলছিল। আবার সেই একই গলার শব্দ এলাে : “আপনি মিডিয়ামের গায়ে স্পর্শ করাল। আমি স্পর্শ করে দেখলাম মিডিয়ামের সমস্ত দেহটা একেবারে শক্ত মড়ার মতাে অর্ধশায়িত অবস্থায় রয়েছে। তার হাত দুটো শক্ত করে ফিতে দিয়ে বাঁধা ছিল।” (মরণের পারে’ পৃষ্ঠা-১৩৯-১৪০) | ‘ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢাকা’ একটা ঘরে একগাদা প্রেত-বিশ্বাসী মানুষ নিজেরাই প্রেতের অভিনয় করলে স্বামী অভেদানন্দের মতাে প্রেতলােকে বিশ্বাসী যে এগুলােকে প্রেতদেরই কাজ বলে ধরে নেবেন এতে আর আশ্চর্য কী? একজন হাত বেঁধে রাখা লােকই যখন বহু নিরপেক্ষ লােককে কৌশলের সাহায্যে ধোঁকা দিতে পারেন, তখন বহুজনে মিলে একজনকে ধোঁকা দেওয়াটা কোনও সমস্যাই নয়। স্বামী অভেদানন্দের সামনে আত্মা লিখল শ্লেটে ঘটনাস্থল নিউ ইয়র্ক। কাল-১৮৯৯ সালের ৫ আগস্ট। সকাল ১০ টা। প্ল্যানচেটের আসর। মিডিয়াম মিস্টার কিলার। মুখখামুখি দুটি চেয়ারে অভেদানন্দ ও কিলার। মাঝখানে একটা ছােট টেবিল। কিলার দুটি শ্লেট বার করলেন। অভেদানন্দ নিজের হাতে শ্লেট দুটির দু-পিঠই মুছে দিলেন। কিলার এবার একটা শ্লেটের ওপর আর একটা শ্লেট রেখে তার ওপর রাখলেন একটা চক। অভেদানন্দকে অনুরােধ করলেন, যাঁর আত্মাকে আনতে চান, তাঁর নাম এক টুকরাে কাগজে লিখে শ্লেটের ওপর রাখতে। অভেদানন্দ লিখলেন, স্বামী যােগানন্দজির নাম। এবার কিলার একটা রুমাল দিয়ে আলগা করে জড়ালেন শ্লেট দুটো। রুমালের আড়ালে ঢাকা পড়ল চক্ ও কাগজের টুকরােটা। কিলার ও অভেদানন্দ দু-হাত দিয়ে শ্লেট ছুঁয়ে রেখে টেবিল থেকে কিছুটা উঁচুতে তুলে রাখলেন শ্লেট জোড়াকে। কিলার বললেন, আপনি যাঁকে চান তাঁকে হয়ত আনতে পারব না। তবু চেষ্টা