পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৫৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫৬

অধ্যায়: তিন


সাধুসন্তদের অলৌকিক ক্ষমতা

ব্রহ্মচারী বাবা

ছেলেবেলা থেকেই কোনও সাধুসন্তর খবর পেলেই তাঁর কাছে দৌড়োই, সত্যি তাঁর কোনও অলৌকিক ক্ষমতা আছে কী না জানার ইচ্ছেয়। সালটা বোধহয় ১৯৬৪। আমার কলেজের বন্ধু বরাহনগরের শশিভূষণ নিয়োগী গার্ডেন লেনের গোরাচাঁদ দত্ত একদিন বলল, ওদের পারিবারিক গুরুদেব এক ব্রহ্মচারী বাবার অলৌকিক ক্ষমতার কথা। ওদের গুরুদেবের নাম আমি আগেই শুনেছি। এও শুনেছি, ওঁর লক্ষ লক্ষ শিষ্য-শিষ্যা। বাংলা তথা ভারতে এই ব্রহ্মচারী বাবার নাম ‘বালক ব্রহ্মচারী’ বলে খুবই পরিচিত।

 গোরা আমাকে একদিন বলল, “তুই তো অলৌকিক ক্ষমতার মানুষ খুঁজছিস, আমি কিন্তু নিজের চোখে আমার গুরুদেবকে একটা অলৌকিক ঘটনা ঘটাতে দেখেছি। বরানগরের স্কুলে একবার গুরুদেবের জন্মদিন পালনের ব্যবস্থা হয়েছে। অনুষ্ঠান সন্ধেতে। কিন্তু, বিকেল থেকেই হাজার হাজার লোকের ভিড়। বরানগরেও ওঁর প্রচুর শিষ্য-শিষ্যা। আমরা স্থানীয় কিছু তরুণ শিষ্য ভলাণ্টিয়ার হয়ে অনুষ্ঠান যাতে সুন্দরভাবে হয় তার দেখাশোনা করছি। বিকেলবেলাতেই এক ভদ্রলোক দশ-বারো বছরের ছেলের হাত ধরে এসে হাজির হলেন। উনি আমাকেই জিজ্ঞেস করলেন, বাবা কখন আসবেন?

 বললাম, সন্ধে নাগাদ।

 ভদ্রলোক বললেন, তিনি এসেছেন বহুদূর থেকে। শুনেছেন বাবার অপার অলৌকিক ক্ষমতা। এও শুনেছেন, বাবার কাছে কেউ দীক্ষা নিতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে তার কানের কাছে মুখ নিয়ে দীক্ষার জপ-মন্ত্র দিয়ে দেন। অনেক আশা করে তার দুই বোবা-কালা ছেলেকে নিয়ে এসেছেন। বাবাকে বলবেন, এদের দুটিকে দীক্ষা দিতে। দেখতে চান, কেমন করে বোবা-কালারা জপ-মন্ত্র শোনে।

 “ভদ্রলোক ও তাঁর ছেলে দুটিকে এক জায়গায় বসিয়ে রেখে ওদের আগমনের উদ্দেশ্য ভলাণ্টিয়ার, চেনা, মুখ-চেনা, অনেকের কাছেই বলেছিল গোরা। খবরটা দাবানলের মতোই ছড়িয়ে পড়েছিল। সব ভক্ত প্রচণ্ড ঔৎসুক্য ও উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করতে শুরু করলেন—কী হয়? কী হয়? সত্যিই কি বাবার দেওয়া জপ-মন্ত্র