পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৫৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সাধুসন্তদের অলৌকিক ক্ষমতা
৬১

ভক্ত। তাই, বিভিন্ন ভক্তদের সন্তুষ্ট করতে কোন জায়গাতেই একনাগাড়ে বেশিদিন থাকতে পারেন না। আমার প্রতিবেশী ভদ্রলোককে ধরলাম, এইবার মহারাজ কলকাতায় এলে তাঁকে দর্শনের ব্যবস্থা করে দেবেন। সেইসঙ্গে দয়া করে এমন ব্যবস্থা করে দেবেন যাতে তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা দেখার সৌভাগ্য আমার হয়।

 প্রতিবেশী জানতেন, আমি সাধু-সন্তদের কাছে যাই। তাই, ভক্তজন অনুমান করে আমাকে ভরসা দিলেন মহারাজ কলকাতায় এলেই একটা ব্যবস্থা করে দেবেন।

 একদিন বহু প্রতীক্ষিত সেই সুযোগ পেলাম। প্রতিবেশী ভদ্রলোকের সঙ্গে গেলাম সেই বিখ্যাত মহারাজ দর্শনে। গুরুদেব তাঁর কিছু নিকটতম শিষ্যদের নিয়ে উঠেছিলেন দক্ষিণ কলকাতারই এক প্রাসাদে। একদিন প্রতিবেশী বললেন, আজ আমাকে গুরুদেবের অলৌকিক ধ্যান দর্শন করাবেন। এই দৃশ্য সব শিষ্যরাও দেখার সুযোগ পান না। সেইদিক থেকে আমি মহাভাগ্যবান। ধ্যানের সময় মহারাজের শরীর মেঝে থেকে হাতখানেক উঁচুতে শূন্যে ভেসে থাকে।

 নির্দিষ্ট সময়ে ধ্যান-কক্ষের বাইরের বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। কক্ষের দরজা তখনও বন্ধ। ভিতর থেকে ধূপের সুন্দর গন্ধ ভেসে আসছে।

 একসময় প্রতীক্ষার অবসান হলো; একজন শিষ্য কক্ষের ভারী দরজাটা একটু একটু করে খুলে দিলেন। আমাদের বারান্দার আলো নিভে গেল। ভিতরটা জ্যোৎস্নার মতো নরম আলোয় ভেসে যাচ্ছে। শান্তদর্শন গুরুদেব নিমীলিত চোখে পদ্মাসনে স্থির। তিনি বসে আছেন শূন্যে, মাটি থেকে প্রায় দেড় ফুট উঁচুতে। তাঁর পিছনে গাঢ় রঙের ভারী ভেলভেটের পরদা।

 বেরিয়ে এলাম চুপচাপ। অলৌকিক কিছুই দেখতে পেলাম না। ভারত বিখ্যাত মহারাজ যা দেখালেন, ম্যাজিকের পরিভাষায় তাকে বলে ‘ব্ল্যাক আর্ট’। গুরুদেবের পিছনের এই গাঢ় রঙের পরদাটাই আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল—

সাধক মহারাজের এই ধ্যানে শূন্যে ভেসে থাকার পিছনে কোন
অলৌকিকত্ব নেই। এটা স্রেফ ব্ল্যাক-আর্টের খেলা। এই ব্ল্যাক-
আর্ট-এর সাহায্যে জাদুকরেরা কোনও রমণীকে শূন্যে
ভাসিয়ে রাখেন, হাতিকে করেন অদৃশ্য,
আবার শূন্য থেকে আমদানী
করেন জিপগাড়ি।

 ব্ল্যাক আর্টের আবিষ্কারক ম্যাক্স আউজিঙ্গার (Max Auzinger)। জার্মানির নাগরিক এই ভদ্রলোক পেশায় নাট্য পরিচালক। তাঁর ব্ল্যাক-আর্ট পদ্ধতি আবিষ্কারের কাহিনি দারুণ মজার।

 তাঁর পরিচালিত একটা নাটকের প্রথম অভিনয় রজনী। বিশেষ এক উত্তেজক