পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৭৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সাধুসন্তদের অলৌকিক ক্ষমতা
৮১

শূন্য থেকে হার আনলেন ও হার মানলেন সাঁই

 ১৯৯৪-র ডিসেম্বরে বিবিসি’র প্রোডিউসর ইনচার্য রবার্ট ঈগল এলেন যুক্তিবাদী আন্দোলন নিয়ে তথ্যচিত্র তুলতে। সেই সময় সাঁইবাবার অলৌকিক ক্ষমতা ছবি-বন্দি করার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন। জিজ্ঞেস করলেন, আমরা সাঁইবাবার আস্তানায় গিয়ে তাঁর বুজরুকি ফাঁস করতে রাজি কি না? বললাম রাজি। সে সাহস আমাদের আছে, আছে পরিকাঠামো। তুমি যেদিন সাঁইয়ের আশ্রমে যাবে, তার সাত দিন আগে থেকেই আমাদের সমিতির কিছু ফুল-কণ্টাক্ট ক্যারাটেতে এক্সপার্ট ছেলে-মেয়েকে ভক্ত সাজিয়ে পাঠাতে হবে। ওদের যাতায়াত থাকা খাওয়ার খরচ তোমার।

 রবার্ট জানিয়ে ছিলেন, কেন এই লড়াইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে? তোমাদের কোলকাতারই ম্যাজিসিয়ান পি. সি. সরকার জুনিয়র তো একাই গিয়ে ভক্তদের সামনে ওর বুজরুকি ফাঁস করেছে?

 বললাম,

সাঁইয়ের আস্তানায় পা রাখলেই তুমি বুঝতে পারবে, পি. সি. সরকারের
যে গল্পটা শুনেছ, সেটা কত অবাস্তব! ওখানে তিনজন ভক্ত পিছু
একজন করে ক্যারাটে এক্সপার্ট রাখা হয়। বেয়ারা ভক্তদের
হাড়-গোড় ভাঙতেই এদের রাখা হয়। তারপরও আছে
ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য ব্যাপক ব্যবস্থা। ওখানে
গেলাম, চ্যালেঞ্জ করলাম, সাঁই ভয়ে
পালালেন—এমনটা অসম্ভব।

 ওখানে অমনটা করলে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেললেও হদিশ মিলবে না। চ্যালেঞ্জ করলে ধুন্ধুমার কাণ্ড একটা ঘটবেই। আমরা তৈরি। তুমি?

 সবশুনে পরিকল্পনা পাল্টালেন রবার্ট ঈগল। ঠিক হলো, শুধু বুজরুকিটুকু ক্যামেরাবন্দি করে চুপচাপ চলে আসবেন। তবু আমাদের সমিতির সাহায্য নিলেন। গাইডের ভূমিকা নিল সমিতি।

 সাঁই তো মহা আনন্দে রবার্টকে ছবি তুলতে দিলেন। বিবিসির প্রোডিউসর ইনচার্জ বলে কথা। পৃথিবী জোড়া প্রচারের প্রলোভন তো চারটিখানি কথা নয়।

 সাঁইবাবাবা শূন্য থেকে একটা হার এনে দিলেন। সাঁইবাবার সত্যিকার অলৌকিক ক্ষমতা থাকলে তো জানতেই পারতেন— গোপন ক্যামেরা বন্দি হয়ে গেছে তাঁর হাতসাফাই।

 রবার্ট ঈগলের ফিল্ম ‘গুরু বাস্টর্স’ অসাধারণ জনপ্রিয়তা পায় পৃথিবী জুড়ে।