পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৮৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সাধুসন্তদের অলৌকিক ক্ষমতা
৯১

এটা সত্যিই দুঃখের যে, লেখাপড়া জানা লোকেদের বেশির
ভাগই অনেক অলৌকিক গাল-গল্পকেই যাচাই না
করে অথবা যুক্তি দিয়ে বিচার না করেই
বিশ্বাস করে ফেলেন।

অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার তান্ত্রিক ও সন্ন্যাসীরা

আচার্য শ্রীমদ গৌরাঙ্গ ভারতী এবং পাগলাবাবা (বারাণসী) দু’জনেই অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী বলে পরিচিত। দুজনেরই ভক্ত-সংখ্যা যথেষ্ট। দু’জনেরই নাম একসঙ্গে উল্লেখ করার কারণ দু’জনের অলৌকিক ক্ষমতা একই ধরনের। আমি শুনেছিলাম এঁরা যে-কোন প্রশ্নের উত্তর লিখিতভাবেই দিয়ে থাকেন, এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই সে উত্তরগুলো নাকি ঠিক হয়।

 আমি ১৯৮৫’র মার্চে গৌরাঙ্গ ভারতীর কাছে গিয়েছিলাম। কিঞ্চিৎ লিখিটিখি শুনে তিনি আমাকে কথা বলার জন্য যথেষ্ট সময় দিয়েছিলেন এবং যথেষ্ট খাইয়েছিলেন। কথায় কথায় গৌরাঙ্গ ভারতী বলেন, তিনি বর্তমানে বেশ কয়েক বছর ধরে অদ্ভুত এক ধরনের অসুখে ভুগছেন। অসুখটা হল হেঁচকি। একনাগাড়ে হেঁচকি উঠতেই থাকে। এ-ও জানালেন কলকাতার তাবড় ডাক্তারদের সাহায্য নিয়েও আরোগ্যলাভ করতে পারেননি।

 আমি কিন্তু গৌরাঙ্গ ভক্তদের কাছে শুনেছি, তিনি বিভিন্ন ভক্তদের দুরারোগ্য রোগ ভাল করে দিয়েছেন। স্বভাবতই গৌরাঙ্গ ভারতীকে প্রশ্ন করেছিলাম, “আপনার ওপর লেখা একটা বইতে পড়লাম আপনি শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরীমাতার বরপুত্র, বাক্-সিদ্ধ, অতীন্দ্রিয় ঐশী-শক্তির অধিকারী। আপনি নিজে যে কোন দুরারোগ্য রোগ যখন মায়ের কৃপায় সারাতে সক্ষম, তখন নিজের রোগ কেন সারাচ্ছেন না?”

 “পরমপুরুষ রামকৃষ্ণদেব কি নিজের ক্যানসার সারাতে পারতেন না? কিন্তু, তিনি মায়ের দেওয়া রোগ-ভোগকেই স্বীকার করে নিয়েছিলেন,” গৌরাঙ্গ ভারতী উত্তর দিয়েছিলেন।

 আমি প্রশ্ন রেখেছিলাম, “মায়ের দেওয়া রোগকে যদি মেনেই নিতে চান, তবে কেন রোগ সারাবার জন্য আধুনিক চিকিৎশাস্ত্রের সাহায্য নিচ্ছেন?”

 না; সঠিক উত্তর ওঁর কাছ থেকে আমি পাইনি। আমতা আমতা করেছিলেন। তবে যা পেয়েছিলাম তাতে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তিনি দিয়েছিলেন আমার প্রশ্নের সঠিক লিখিত উত্তর। আমার প্রথম প্রশ্ন ছিল, “আমি কি বিবাহিত?”

 একটা চোট রাইটিং-প্যাডে উত্তরটা লিখে গৌরাঙ্গ ভারতী তাঁর হাতের কলমটা নামিয়ে রেখে আমাকে বললেন, “আপনি কি বিয়ে করেছেন?”বললাম, “হ্যা, করেছি।”