পাতা:অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড) - প্রবীর ঘোষ.pdf/৯৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯৬
অলৌকিক নয় লৌকিক (প্রথম খণ্ড)

 স্বপ্নাদেশ পেয়ে ফকির হবার আগে ফকিরবাবা সুর্য নামে পরিচিত ছিলেন। পুরো নাম, সূর্যকুমার মাইতি। ব্যবসা ছিল দুধ বিক্রি করা ও কবিরাজি। সুর্য মাইতির বাবা প্রিয়নাথ ছিলেন কবিরাজ। ছেলে সূর্য ওষুধ তৈরিতে সাহায্য করতেন। বর্তমানে সূর্য মাইতি ওরফে ফকিরবাবার চার মেয়ে দুই ছেলে। ছেলেরা বাবাকে সাহায্য করছেন। কামদেবপুরের দোকানি-পশারিরাও ফকিরবাবার পরম ভক্ত। ফকিরবাবার অনেক অলৌকিক ঘটনার কথাই শুনলাম। ভরে ফকির বাবা ত্রিকালদর্শী হয়ে ওঠেন। তখন বন্ধ দরজার ওপাশে মানুষটি বসলেই বাবা তাঁর সব-কিছুই জানতে পারেন। এটুকু বুঝতে অসুবিধে হয় না, সপ্তাহের চারটে দিন বাবার কল্যাণে কামদেবপুরের আশপাশের বহু মানুষ দোকান-পশার করে দু-পয়সা ঘরে তুলছে।

 কোনও কিছু চুরি গেলে বা হারিয়ে গেলে অবশ্য ফকিরবাবার কাছে এসে লাভ নেই। একটা সাইনবোর্ডে লেখাই আছে, চুরি বা হারানোর জন্য আসবেন না।

 দেখলাম, ভক্তদের কৃপায় বাবার অর্থের অভাব নেই। গাড়ি, বাড়ি সবই আছে।

 একসময় আমাদের ডাক পড়তে শুরু করল। আমার ডাক পড়তে ফকিরবাবার কাছে প্রশ্ন রেখেছিলাম, “আমি কি শিগগির কোনও চাকরি-বাকরি পাব বাবা?”

 বাবা উত্তর দিয়েছিলেন, “না, চাকরি তোর হবে না। কাঁচা আনাজের যে ব্যবসা এখন করছিস, তাই আরও বেশ কিছু বছর করতে হবে।”

 ১৯৬৬-র মে মাসেই, অর্থাৎ ঠিক তার পরের মাসেই আমি স্টেট ব্যাঙ্কে যোগ দিই।

 কাঁচা-আনাজের সঙ্গে আমার সম্পর্ক চিরকালই ক্রেতা হিসেবে। ফকিরবাবার এই ধরনের ভুল করার কারণ, আমাদের পাঁচ বন্ধুর পোশাক, কথাবার্তা, আলোচনা সবই ছিল মুদির দোকানি ও কাঁচা-আনাজের ব্যবসায়ীর মতো। ফকিরবাবার খবর সংগ্রহকারীরা তাই আমাদের সঙ্গে আলাপ করে আমাদের নামের সঙ্গে যে পরিচয় ফকিরবাবাকে দিয়েছিল, ফকিরবাবা সেই পরিচয়কেই সত্যি বলে ধরে নিয়ে ছিলেন। তাই আমাদের পাঁচ বন্ধুর সমস্যা ও জীবিকা সম্পর্কেই পুরোপুরি ভুল করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

আগরতলার ফুলবাবা

১৯৮৬-র ২৮ ফেব্রুয়ারি। আগরতলা প্রেস ক্লাবের হলে একটা প্রেস কনফারেন্স ছিল ‘অলৌকিক নয়, লৌকিক’ শিরোনামের অলৌকিক বিরোধী এই প্রেস কনফারেন্সে যোগ দিতে আমি তিনদিন আগেই আগরতলা পৌছেই। সেখানে এক সাংবাদিক বন্ধু আমাকে প্রথম ফুলবাবার কথা বলেন। তাঁর কথামতো ত্রিপুরার সবচেয়ে ক্ষমতাবান অবতার এই ফুলবাবা। ইতিমধ্যে স্থানীয় তিনটি দৈনিক