পাতা:অসাধারণ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S Sb- অসাধারণ সরকার চালের কারবারে কম করেও সাত লক্ষ টাকা মুনাফা পেয়েচেন । তেরশ* পঞ্চাশ সালে দুর্ভিক্ষের বছর। তেরো সিকে দরে ধানের মণ কিনে সাড়ে ষোল টাকা মণ দরে ধান বিক্রী করেন। চালের কনট্রাক্ট নিয়ে এক হাজার টন চাল খরিদ করেন। ত্রিপুরা জেলা থেকে। তারপরে সে দেশে চালের দীর উঠে গেল চল্লিশ টাকা মণ । ভালো কাজ করেন নি তা নয় । দেশের বাড়ীতে “প্রায় দু’হাজার লোককে ফেন-ভাতের খিচুড়ি খাইয়েচেন, কাপড় বিতরণ করেচেন কত লোককে । সম্প্রতি দুটি মিলিটারী কনট্রাক্টের কাজে শিবশঙ্কর অনেক টাকা রোজগার করেচেন। দুহাতে ঘুষ বিলিয়েও ছ’লক্ষ টাকা ঘরে এনেচেন। এ বাদে খুচরো কারবার তার অনেক রকম আছে, এই ছোট আপিসটাতে বসে সারা বাজারের বহু গুপ্ত খবর রাখচোন। টেলিফোনের বিরাম বিশ্রাম নেই এক মিনিট । বাজারে তার বহু চর সর্বদা ঘোরাঘুরি করচে, শেয়ার মারকেট থেকে সর্ষে পর্য্যন্ত কোনো বাজারের গুপ্ত খবর ওদের জানতে বাকি নেই। মোটের উপর শিবশঙ্করের দিন যাচ্ছে ভালো, ধুলো-মুঠো ধরলে সোনা মুঠো হচ্ছে। আর কি অসম্ভব খাটিয়ে লোক শিবশঙ্কর ৷ চরকির মত ঘুরচেন। এখানে ওখানে, এ আপিস ও আপিস, কত লোকের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করচেন, কত লোক তার বাড়ী গিয়ে তঁর সঙ্গে দেখা করচে- যে লোক এমনি নরম হয় না, তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করে অগ্রসর হতে হচ্ছে, ছুচি যেখানে গলে না, সেখানে হাতী গলিয়ে দিচ্ছেন শিবশঙ্কর,-পয়সা কি আমনি হয় ? শিবশঙ্করের অভিজ্ঞতা। এই যে, অর্থ উপাৰ্জনের ক্ষেত্রে দয়া মায়া চক্ষুলজ ইত্যাদি দুর্বলতা। যে বিচক্ষণ কারবারী সে এ সব মানবে না। কমপিটিশনের বাজার, চক্ষুলজা। এখানে খাটে না । আর একটা অভিজ্ঞতা, অবিশ্যি বড় মুল্যবান অভিজ্ঞতা যে, ঘুষ অসাধ্য সাধন করতে পারে। শিবশঙ্করবাবু বলেই থাকেন-ওহে এমন লোক দেখলাম না।