পাতা:অসাধারণ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(br) অসাধারণ -পাগল ঠাকুরের আখড়ায় ? -হঁ্যা। একটু বসেছিলাম। বেশ ভালো লোক। কোথায় কলেরা হয়েচে, নিজে গিয়ে তাদের সেবা করচে রাত্তির বেলাতে । — ঐ পর্য্যন্ত। উনি চুপ করে গেলেন, বুঝলুম না। রাগ করলেন। কিনা ৷ তার পরদিন আবার বিকেলে পাগলের আখড়ায় গিয়ে হাজির হই । কিসের একটা টান অনুভব করলাম, না গিয়ে থাকা গেল না । পাগল ঠাকুর আপন মনে বসে গান করছিল একখানা তালপাতার চেটাই পেতে । ওর গানই ওর উপাসনা, ওর মুখে গান শুনলেই আমার তা মনে হয়েচে । আমার বয়েস কম হোলেও আমি তখন অনেক বুঝি। ওর মত ভক্তি আমি কারো দেখিনি। মাসিমাকে বাড়ী ফিরে কথাটা আমি বলেছিলাম । মাসিম গীতা নিয়মিত পাঠ করতেন , রামায়ণ মহাভারত র্তার বড় প্রিয় ছিল, ব্রত উপবাস করতেন, রোজ ভোরে গঙ্গাস্নান করে পুজো-আচ্চা করতেন বেলা ন’টা পর্য্যন্ত । কৃষ্ণ ঠাকুরের ছবিতে চন্দন মাখাতেন, ফুল দিতেন । পাগল ঠাকুর ওসব কিছু করে না। অথচ সে ভক্ত লোক, এ কথা মাসিম বুঝবেন না । তবুও মাসিমা মন দিয়ে কথাটা শুনলেন, শুনে চুপ করলেন । পাগল ঠাকুরকে বললাম-কখন এলে কাল রাত্তিরে ? --সারা রাত ছিলাম। বাবাঠাকুর। দুটোই মারা গেল, শ্মশানে গেলাম তাদের ভাসিয়ে দিতে । --পোড়ালে না ? —গরীব লোকদের পোড়াচ্চে কে বাবাঠাকুর । কাঠাকুটো কোথায় ? গুরুগোসাঁইয়ের নামে গঙ্গার বুকে ভাসিয়ে দিলাম-আর ভাবনা কিসের ? দেহটা হাঙ্গর কুমীরে খেলেও দেহ দিয়ে জীবের উপকার হোল। পুড়িয়ে দিয়ে ফল কি, বলে ? ওদের একটা ছেলেকে নিয়ে এলাম আমার এখানে। ওই