পাতা:অসাধারণ - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ङमूि 8& জিনিস নেই। এখানে। একবার গিয়ে ঘুরে আসবেন প্রথম যৌবনের শত মধুস্কৃতিমাখা গ্রামটিতে। হয়তো নিরুপমার সঙ্গে দেখা হয়েও যেতে পারে-অন্তত সেই সব জায়গাতেও আবার গেলে জীবনের একঘেয়েমিটা কেটে যাবে। মাথা ধরেচে। বেজায়। শুধু ওই রেডিওটাব জন্যে। কতবার তিনি বারণ বা রেচেন-কিন্তু এ বাড়ীতে তার কথা কেউ আমলে আনে ? সাধে কি তিনি —শরীর কেমন বিমা ঝিম করচে । মধ্য-রাত্রে বড় পুত্রবধু প্রতিমার ছোট খোকাটি জেগে মায়ের ঘুম ভাঙালো । প্রতিমা উৎকর্ণ হয়ে শুনলো দোতলায় শ্বশুরের ঘর থেকে কেমন যেন একটা অস্বাভাবিক গোঙানির শব্দ আসচে। সে তখুনি নিচে এসে সকলের ঘুম ভাঙালে । রায় বাহাদুর বিছানায় গুটিশুটি হয়ে অস্বাভাবিক ভাবে শুয়ে আছেন, তঁর মুখ থেকে একটা অস্পষ্ট শব্দ বার হচ্চে। বড় ছেলে বাড়ী নেই। ছোট ছেলে ফোন করে দিলে ডাক্তারকে । তারপর নিজেও ছুটলো। খুব-হৈ-চৈ উঠলো। সবাই বুকে পড়লো বিছানার ওপরে, বড় মেয়েকে আনতে মোটর ছুটলো বাগবাজারে। ঝি, চাকর, মেয়ের দল, পুত্রবধুর দল, নাতি-নাতনীরা মিলে লোকে লোকারণ্য ঘরের ভেতর । রায় বাহাদুর কি একটা বলচেন অস্পষ্ট গোঙানির মধ্যে-কেউ বুঝতে পারচে না । প্রতিমা কান পেতে ভাল করে, শুনে বল্লেী-নিরু কে ? নিরু। কার নাম ? নিরু নিরু করে যেন কি বলচেন । ডাক্তার এসে বলে স্ট্রোক হয়েচে । সেবাশুশ্রুষা চললো, বড় ছেলেকে টেলিগ্রাম করা হোল রংপুরে। সেখানে সে যুদ্ধের বড় কনট্রাকটারির কাজে গিয়েচে । ট্রাঙ্ক-কল করা গেল মেজ ছেলেকে ঝরিয়ার কয়লার খনিতে । সেদিন বেলা বারোটার আগে রায় বাহাদুর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন ।