পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (দ্বিতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ঐশিক্ ব্যবস্থায় বিশ্বাস

একটি দুঃখী বালক অল্প বয়সে পিতৃহীন ও মাতৃহীন হইয়াছিল। সে পিতা মাতার একমাত্র সন্তান। তদীয় ভরণপোষণের ভারগ্রহণ করেন, তাহার এরূপ কোনও আত্মীয় ছিলেন না। আহার প্রভৃতি সমস্ত আবশ্যক বিষয়ে তাহার ক্লেশের পরিসীমা ছিল না। কিন্তু, তাহার বুদ্ধি ও বিবেচনা বিলক্ষণ ছিল। সে স্থির করিয়াছিল, আমি প্রাণান্তে পরের গলগ্রহ হইব না, পরের গলগ্রহ হওয়া অপেক্ষা অনাহারে প্রাণত্যাগ করা ভাল। যথাশক্তি পবিশ্রম করিয়া, যাহা পাইব, তাহাতেই কোনও রূপে আপন ভরণপোষণ সম্পন্ন করিব।

 একদিন এই দীন বালক শুনিতে পাইল, অমুক ব্যক্তির একটি অল্পবয়স্ক পুরিচারকের প্রয়োজন হইয়াছে, তিনি লোকের অন্বেষণ করিতেছেন। এই কথা শুনিয়া, অতিশয় আহ্লাদিত হইযা, সে, ঐ ব্যক্তির নিকটে উপস্থিত হইল, এবং জিজ্ঞাসা করিল, মহাশয়, আপনকার কি একটি অল্পবয়স্ক পরিচারকের প্রযোজন হইযাছে? যদি সেরূপ প্রযোজন হইয়া থাকে, অনুগ্রহ করিয়া, আমায় নিযুক্ত করুন। সে ব্যক্তি বলিলেন, এক্ষণে আমার ওরূপ পরিচাবকের প্রয়োজন নাই। বালক শুনিয়া, হতাশ্বাস হইয়া, ম্লান-বদনে দণ্ডায়মান রহিল।