পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
আখ্যানমঞ্জরী।

কহিলেন, তোমায় সে ভাবনা করিতে হইবে না, আমরা অনায়াসে তাঁহার নিকট টাকা পাঠাইতে পারিব। বালক কহিল, না মহাশয়। আমি সে ভাবনা করিতেছি না, আমি আপনার নিকট এই প্রার্থনা করিতেছি, যখন আপনি আমার পিতার নিকট টাকা পাঠাইবেন, ঐ সঙ্গে এই তিনটি গিনিও পাঠাইয়া দিবেন, আমি যত দিন এখানে থাকিব, আমার এক পয়সাও প্রয়োজন হইবে না, কিন্তু এই তিনটি গিনি পাইলে, তাঁহার যথেষ্ট উপকার বোধ হইবে।

 অধ্যক্ষ, তাহার সদ্বিবেচনা ও পিতৃবৎসলভাব আতিশয্য দর্শনে, অত্যন্ত প্রীত হইলেন, এবং সেই বালকের প্রতি নিরতিশয় সন্তোষ প্রদর্শন করিলেন। অনন্তর তিনি, রাজার গোচর করিয়া, তাহার পিতার পেন্‌শনের ব্যবস্থা করিয়া দিলেন, এবং আগামী ছয় মাসের পেন্‌শন ও সেই তিনটি গিনি তাহার পিতার নিকট প্রেরণ করিলেন।

 তদবধি, সেই নিঃস্ব পরিবারের, দুঃখের অবস্থা অতিক্রান্ত হইয়া, পুনরায় সুখের ও স্বচ্ছন্দের অবস্থা উপস্থিত হইল।


নিঃস্বার্থ পরোপকার।

 পারিস নগরে, হেনল্ট নামে এক বিধবা নারী থাকিতেন। তিনি, নস্য বিক্রয় ব্যবসায় দ্বারা, বহু কাল পর্য্যন্ত, স্বচ্ছন্দে ও সম্মান পূর্ব্বক কাটাইলেন, কিন্তু বায়াত্তর বৎসর বয়সে,