পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দয়াশীলতা।
৩৭

কাফরিকন্যারা, বোধ হয়, শ্রমলাঘবের নিমিত্ত, কর্ম্ম করিবার সময় গান করিতে লাগিল। পার্ক কাফরিভাষা কিছু কিছু বুঝিতে পারিতেন। গান শুনিয়া, কাফরিজাতির উপর তাঁহার বিলক্ষণ ভক্তি জন্মিল। দেখিলেন, তিনিই তাহাদের গানের বিষয়। গানের মর্ম্ম এই, “ঝড় বহিতেছিল, বৃষ্টি পড়িতেছিল, দীন হীন শ্বেতকায় মনুষ্য ক্লান্ত হইয়া আমাদের বৃক্ষের তলে বসিয়া ভাবিতেছিলেন, তাঁহার জননী নাই যে দুগ্ধ দেন, স্ত্রী নাই যে আহার প্রস্তুত করিয়া দেন, এস, আমরা শ্বেতকায় মনুষ্যকে আশ্রয় দি, তাঁহার কেহ নাই, তিনি নিরাশ্রয়।”

 কাফরিস্ত্রীদিগের দয়া ও সৌজন্য দর্শনে, পার্ক মোহিত ও চমৎকৃত হইলেন। সে রাত্রি তাহারা আশ্রয় না দিলে, তাঁহার দুর্গতির সীমা থাকিত না, হয় ত, প্রাণনাশ পর্য্যন্ত ঘটিত। রাত্রি প্রভাত হইলে, তিনি গাত্রোত্থান করিলেন, গৃহস্বামিনীর নিকটে গিয়া, আন্তরিক ভক্তিসহকারে, তাহাকে শত শত ধন্যবাদ দিলেন, এবং তাহার ও তাহার কন্যাদিগের নিকটে বিদায় লইয়া, রাজধানী অভিমুখে প্রস্থান করিলেন।

দয়াশীলতা।

 পারিস নগরে মিজিয়ন নামে এক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি সামান্যরূপ ব্যবসায় দ্বারা জীবিকা নির্ব্বাহ করিতেন। কিছু দিন পরে, বিস্তর ক্ষতি হওয়াতে, তাঁহার ব্যবসায় বন্ধ হইয়া