পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (প্রথম ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরের প্রাণরক্ষার্থে প্রাণদান।
৪৩

 সুজেটের পিতৃব্য একটি বিড়ালকে অত্যন্ত ভাল বাসিতেন। ঐ বিড়াল মরিয়া গেলে পর, উহার চর্ম্ম লইয়া, তিনি বিড়ালের আকৃতি নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। ঐ আকৃতি তাঁহার শয্যার শিখরদেশে স্থাপিত থাকিত। প্রস্থানকালে সুজেট্‌ কহিল, দেখ, আমি পিতৃব্যকে অত্যন্ত ভাল বাসিতাম, তাঁহার স্মরণার্থে এই আকৃতিটি লইয়া যাইব। এই বলিয়া উঠাইতে গিয়া, উহার অসম্ভব ভার দর্শনে, সে চমৎকৃত হইল। তখন সেই যুবক, কৌতূহলাক্রান্ত হইয়া, তাদৃশ ভারের কারণ নির্ণয় করিবার নিমিত্ত, বিড়ালের চর্ম্ম ছেদন করিবা মাত্র, স্বর্ণমুদ্রা বৃষ্টি হইতে লাগিল। সুজেটের পিতৃব্য অত্যন্ত কৃপণ ছিলেন, আহারাদির ক্লেশ স্বীকার করিয়াও, সহস্র লুইডোর[১]সঞ্চয় করিয়া রাখিয়াছিলেন। এক্ষণে, তাঁহার সঞ্চিত বিত্ত তদীয় সুশীলা ভ্রাতৃতনয়ার নিরুপম গুণের পুরস্কার হইল।


পরের প্রাণরক্ষার্থে প্রাণদান।

 সেণ্ট এটিয়ন নামে এক ব্যক্তির প্রাণদণ্ডের আদেশ হওয়াতে তিনি লুকাইয়া থাকেন। রাজপুরুষেরা সবিশেষ অনুসন্ধান আরম্ভ করাতে, তিনি প্রকাশভয়ে, অধিকদিন এক স্থানে থাকিতে পারিতেন না, কোনও স্থানে দুই তিন দিন থাকিয়া, স্থানান্তরে প্রস্থান করিতেন। প্রতিক্ষণেই, তাঁহার রাজপুরুষদিগের হস্তে


  1. ফরাসিদেশে প্রচলিত স্বর্ণমুদ্রা, মূল্য ২০\টাকা।