পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অন্নসমস্যা
৬৯

ত প্রসারিত হয়নি, আর আমাদের উদ্দেশ্য শিল্প বা বাণিজ্যশিক্ষা এরূপও ত মনে হয় না। কাজেই শিক্ষালাভের এই আগ্রহকে ঠিক পথে পরিচালিত কর্‌লে দেশের উপকার হবে, শুধু চাক্‌রীপ্রিয় গ্রাজুয়েট্‌ তৈরী করলে কোন কাজে লাগবে না।

 আত্মাভিমানের বশে বাঙ্‌লার উচ্চজাতি শ্রমের মর্য্যাদা ক্রমশঃ ভুলে গিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যাদি কাজ থেকে অবসর নিলেন। এদিকে লেখাপড়া তাঁদেরই একচেটিয়া ছিল। কাজেই সমাজে এক ভীষণ অনিষ্ট সাধিত হ’ল। শিক্ষাদীক্ষার সহিত ব্যবসা বা শিল্পের আর কোন সম্পর্কই রইল না। আমাদের সমাজে বিদ্যাবুদ্ধি সব উঁচু জাতের। সমাজের নিম্নস্তরে দলিত জনসঙ্ঘের মধ্যে তাই প্রতিভার বিকাশ হ’ল না। ইংলণ্ডে ষ্টিম্ এঞ্জিন্ উদ্ভাবনের সঙ্গে সঙ্গে শিল্পব্যাপারে, একটা ওলটপালট—একটা যুগ পরিবর্ত্তন হয়ে গেল। হাতে যারা তাঁত চালাত সেই সব তাঁতীরা প্রথমে কলের তাঁত ভেঙে দিলে। কারণ কলে অল্প পরিশ্রমে অনেক কাজ হতে লাগ্‌ল। কিন্তু ইংলণ্ড শীঘ্রই সে ধাক্কা সাম্‌লে নিতে সমর্থ হল। গোলমাল ক্রমে থেমে গেল। ইংলণ্ডে জাতিভেদ ছিল না—লক্ষ লক্ষ লোককে সেখানে নীচ জাত ব’লে অসুবিধা ও নির্য্যাতন ভোগ কর্‌তে হত না। তাই সেখানে সমাজের সকল স্তরেই প্রতিভার বিকাশ হয়েছে। তাই ক্রমে দেখা গেল শিল্পজগতের সেই পরিবর্ত্তনের যুগে নাপিত আর্করাইট—যিনি এক পেনি পারিশ্রমিক নিয়ে ক্ষৌরকার্য্য কর্‌তেন— তিনি হোলেন আবিষ্কারক। আর তাঁতি (Hargreaves) হার্‌গ্রিভ্‌সও তাঁর নব আবিষ্কারের দ্বারা এই কার্য্যের সহায়তা কর্‌লেন। সে দেশে সকলেরই প্রতিভা সকল ক্ষেত্রে স্ফুরিত হয়েছে। কিন্তু আমাদের এই জাতিভেদের দেশে? এখানে উঁচু জাত যেদিন জাত বাঁচাবার জন্যে ৬৪ কলাবিদ্যা একে একে পরিত্যাগ করলেন, সেদিন