পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

সার্জ্জন হলেন পরামাণিক, আর বেদেরা হলেন বোটানিষ্ট। তারপর এসব ক্ষেত্রে আমরা যেমন উন্নতির পরিচয় দিয়েছি তার কথায় আর কাজ নেই! বংশগতভাবে চর্চ্চা হওয়ায় হাতের কৌশল খুব নিপুণ হয়েছিল স্বীকার করি এবং শিল্পও সূক্ষ্ম হয়েছিল। ঢাকাই মস্‌লিন শিশিরসিক্ত হয়ে থাক্‌লে কাপড় ব’লে কেউ বুঝ্‌তে পার্‌ত না। শিল্পও সূক্ষ্ম হয়েছিল। কিন্তু বংশগত হওয়ায় প্রধান ক্ষতি হ’ল এই যে, আমাদের দেশের আবেষ্টনের মধ্যে দেকার্ৎ বা নিউটনের উদ্ভব ভাবে কাজে অসম্ভব হয়ে উঠ্‌ল—এই জাতিভেদের আওতায় সমাজে স্বাধীনচিন্তা বা প্রতিভার বিকাশ অসম্ভব হয়ে উঠ্‌ল। কাজেই কলকব্জার রথে চ’ড়ে পাশ্চাত্য দেশে শিল্প যখন আশ্চর্য্য গতিতে উন্নতির পথে অগ্রসর হতে লাগ্‌ল তখন বাঙলার ফরাসডাঙ্গা ঢাকা প্রভৃতি স্থানের ও অন্যান্য তাঁতীরা শুধু অবাক বিস্ময়ে অসহায় শিশুর মত সেই দিকে চেয়ে রইল—তাদের সঙ্গে সমান গতিতে অগ্রসর হবার কল্পনাও তাদের মনে উদিত হ’ল না। অথচ এই ভারতের তাঁতী কিছুকাল পূর্ব্বে য়ুরোপের বাজারে উৎকৃষ্ট জিনিষ পাঠিয়ে প্রচুর লাভ কর্‌ত। যাহোক, এই বাণিজ্যযুদ্ধে ভীষণ পরাজয় হ’ল বাঙ্‌লা দেশের। বোম্বাই আত্মচেষ্টায় ধাক্কা সামলে নিয়ে এখন আবার মাথা উঁচু ক’রে দাঁড়াতে পেরেছে। খুব স্পর্দ্ধা ও গৌরবের কথা। বোম্বাই প্রদেশের বণিক দেখ্‌লেন সেখানে যথেষ্ট পরিমাণে তুলা উৎপন্ন হয়; তখন ভাব্‌লেন—বোম্বাইএ কাপড়ের কল হবে না কেন? তাঁরা ১৮৫০ খৃষ্ট্রাব্দে বা ঐ সময়েই কাপড়-কলে কৌশলাদির শিক্ষা কর্‌তে লাগ্‌লেন। তারপর কল স্থাপন ক’রে প্রথম প্রথম অনেক লোক্‌সান দিলেন। এ সব কথা ওয়াচার লিখিত তাতা’র জীবনীতে প’ড়ে দেখ্‌বেন। তারপর একবার সফলতার মুখ দেখ্‌তেই তাঁদের আশা ও সাহস খুব