পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

 দেশে অন্নসমস্যা দিন দিন কঠিন হতে কঠিনতর হয়ে উঠ্‌ছে, অথচ যার বলে ‘ক’রে-খেতে’ পারা যায় এমন কোন শিক্ষার বন্দোবস্ত শীঘ্র হয়ে উঠবে এমন কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ইউনিভারসিটি-ডিগ্রীর প্রসাদে কায়ক্লেশে ৪০।৫০ বা ৬০৲ আস্‌তে পারে; কিন্তু তার ফলে মধ্যবিত্ত বাঙালীর দারিদ্র্য-দুঃখ ঘুচে যাবার কোন আশা কারো মনে উদিত হচ্ছে না। চাক্‌রীর দুর্দ্দশার কথা অনেকবার বলেছি—সেই সম্পর্কে আর-একটা কথা বলি। বাজারে চাক্‌রী এখনও মেলে জানি—১৫।২০ বা ২৫৲ মাহিনা, কিন্তু এও মেলা বড় ভার হয়ে উঠ্‌ছে। আগে পাশ কর্‌লে চাক্‌রী হত। এখন অবস্থা এমনি দাঁড়িয়েছে যে চাকরীর উমেদারী ক’রে হার মেনে গিয়ে একজন গ্রাজুয়েট রেল-কোম্পানীর সুপারিণ্টেণ্ডেটকে কুলী-লাইসেন্স পাবার আশায় দরখাস্ত লিখেচেন। সে দরখাস্ত আমার কাছে এসেছিল। ব্যাপার ত এই! এর উপর আর কিছু বল্‌তে হবে কি? আজ অন্নসমস্যার মীমাংসা সম্বন্ধে দুচারটি কথা বল্‌ব। কোন্ পথ অবলম্বন কর্‌লে—আমরা এই পেটের দায় থেকে নিস্তার পাব তা আমি ইতিপূর্ব্বে কতকটা নির্দ্দেশ কর্‌বার চেষ্টা করেছি আজ সেই কথাই আরও স্পষ্ট ক’রে বল্‌ব। তাই বলে কেউ মনে কর্‌বেন না যে আমি এখন একটা সোজা এবং বাঁধাপথ দেখিয়ে দেব যা অবলম্বন কর্‌লে সহজে এই মরাবাঁচার কথার মীমাংসা হয়ে যাবে। তা নয়! সমস্যা যেমন জটিল, আমাদের চেষ্টা ও অধ্যবসায় তেমনই প্রচণ্ড হওয়া চাই।

 আমাদের দেশের অনেক যুবক বিদেশ থেকে ইলেক্‌টিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, রং করা, চামড়া-কষ-করা প্রভৃতি শিখে আস্‌ছেন। কিন্তু আমরা তাঁদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পার্‌চি কৈ? শুধু রঙ বা চামড়া বা অন্য কিছুর কার্য্য শিক্ষা কর্‌লেই ত চলবে না। শিক্ষালব্ধ জ্ঞান প্রয়োগ কর্‌বার জন্যে উপযুক্ত ক্ষেত্র চাই। তাই বল্‌ছি আমাদের