পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

॥৵৹

রোগমুক্তির পর হইতে ইঁহাকে রাত্রি নয়টার পর পড়াশুনা করিতে কখনও দেখা যায় নাই।

 প্রফুল্লচন্দ্রের সাহিত্য-সাধনা, রাসায়নিক গবেষণা ও লোকহিতকর অনুষ্ঠান এত অধিক যে তাহাতেও পৃথিবীর বিস্ময় উৎপাদিত হইয়াছে। রুগ্নদেহে এই অদ্ভুত সাফল্য লাভের একমাত্র কারণ আত্মহারা হইয়া কার্য্যসম্পাদনের চেষ্টা। প্রফুল্লচন্দ্র তাঁহার জীবনের কৃতকার্য্যতার কারণ সম্বন্ধে বলিয়াছেন, “He believes in doing one thing at a time and doing that well”—এক সময়ে এক টি মাত্র কাজে হাত দিবে এবং তাহাই সুসম্পন্ন করিবে— এই একনিষ্ঠাই জীবনের সফলতার কারণ।

 প্রফুল্লচন্দ্র দ্বাদশ বর্ষ বয়সে পীড়িত হন এবং স্কুলের সহিত সর্ব্বপ্রকার সম্পর্ক-বিরহিত হইয়া দুই বৎসর বাটীতে থাকিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। প্রফুল্লচন্দ্রের পিতার সুবৃহৎ লাইব্রেরীর কতকাংশ কলিকাতায় স্থানান্তরিত হইয়াছিল এবং কতকাংশ বাটীতে ছিল। স্কুলের পড়ার কোন চাপ না থাকায় প্রফুল্লচন্দ্র গভীর অভিনিবেশ সহকারে এই সকল পুস্তকপাঠে আত্মনিয়োগ করেন। এই সময় হইতেই তাঁহার ইংরাজী সাহিত্য ও ইতিহাসের প্রতি অত্যন্ত আসক্তি জন্মে। এই সময়ে ইংরাজী সাহিত্য ও ইতিহাসের চর্চা ভিন্ন তিনি ল্যাটিন ও ফরাসী ভাষাও শিক্ষা করিয়াছিলেন। এই পাশ্চাত্য ভাষাজ্ঞান উত্তরকালে তাঁহার বিলাতে শিক্ষালাভের পথ সুগম করিয়া দেয়।

 রোগমুক্ত হইয়া প্রফুল্লচন্দ্র কলিকাতায় এলবার্ট স্কুলে (Albert School) প্রবেশ করেন। তখন এই বিদ্যালয়ের সুনাম বঙ্গদেশময় ব্যাপ্ত হইয়া গিয়াছিল, এবং ইহা একটি শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় বলিয়া গণিত হইত। সুবিখ্যাত কেশবচন্দ্র সেনের অনুজ লব্ধপ্রতিষ্ঠ কৃষ্ণবিহারী