ব্রাহ্মণ আসেন, তখন বাঙ্গালায় ৭০০ ঘর ব্রাহ্মণ ছিল। কিন্তু আজ কাল সেই ৭০০ ঘরের কোন বংশধর কোথাও দেখিতে পাওয়া যায় না, অথচ ৫ জন আগন্তুক ব্রাহ্মণের বংশধররাই সমস্ত দেশ ছাইয়া ফেলিয়াছে।”
সকলেই জানেন যে যখন কোনও নিম্নজাতির মধ্যে কোনও দুরদেশীয় মুষ্টিমেয় উচ্চজাতীয় পুরুষ আসিয়া বাস করে, তখন স্বভাবতঃই তাহারা নিম্ন জাতিতেই বিবাহ করিতে বাধ্য হয়। অনেকে আবার বিশ্বাস করেন যে অন্যান্য প্রদেশের কয়েক শ্রেণীর ব্রাহ্মণ মূলতঃ বিদেশীয়। ইতিহাস এবং সমাজ-বিজ্ঞান প্রমাণ করিয়াছে যে কয়েকটি জায়গা ছাড়া বাংলা ও অপরাপর প্রদেশের ব্রাহ্মণগণ বিভিন্ন জাতির সংমিশ্রণে উৎপন্ন হইয়াছে; মানব-বিজ্ঞানেও তাহাই বলে। নাসিকা ও মস্তকের মাপ লইয়া দেখা গিয়াছে যে ব্রাহ্মণ ও অব্রাহ্মণের মধ্যে বিশেষ কোনও প্রভেদ নাই। চন্দ মহাশয় তাঁহার নিজের গবেষণার ফলস্বরূপ লিখিয়াছেন:—“বহির্দেশীয় ব্রাহ্মণের মস্তকের আকৃতি দেখিয়া তাঁহাকে অন্তর্দেশীয় বৈদিক ঋষির বিশুদ্ধ বংশধর বলিয়া মনে হয় না, বরং শূদ্র এবং অন্ত্যজ শ্রেণীভুক্ত অব্রাহ্মণ প্রতিবেশীগণের সহিত তাঁহাদের আকৃতিগত যথেষ্ট সাদৃশ্য দেখা যায়। একদিকে যুক্ত প্রদেশের কান্যকুব্জ ব্রাহ্মণ এবং বিহারের মৈথিল ব্রাহ্মণের মস্তকের গঠন এবং অপর দিকে গুজরাটের নাগর ব্রাহ্মণ এবং বাংলার রাঢ়ী, বারেন্দ্র ও বৈদিক ব্রাহ্মণের মস্তকের গঠন এই উভয়ের মধ্যে বিস্তর প্রভেদ রহিয়াছে। কেবল মাত্র বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে রক্তের মিশ্রণ ইহার কারণ নহে, কিন্তু মনে হয় প্রান্ত-প্রদেশীয় ব্রাহ্মণগণ মূলতঃ প্রান্ত-প্রদেশবাসী জাতি, তাহাদের অব্রাহ্মণ যজমানগণ যে পরিমাণে অন্তর্দ্দেশীয় জাতিগণের রক্ত লাভ করিয়াছে, ইহারাও সেই পরিমাণে পাইয়াছে।” সার হার্বার্ট রিস্লী