পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

জিজ্ঞাসা কর্‌তে শিখেচি,—সে-ক্ষেত্রে সকল রকম বিধিবিধানের একটা বুদ্ধিগত জবাবদিহি আছে বলে মান্‌তে অভ্যাস কর্‌চি; কিন্তু সমাজে পরস্পরের সঙ্গে ব্যবহার, যার উপরে পরস্পর গুরুতর সুখ দুঃখ শুভাশুভ প্রত্যহ নির্ভর করে সে সম্বন্ধে বুদ্ধির কোনো কৈফিয়ৎ নেওয়া চলে একথা আমরা ভাবতেও একেবারে ভুলে গেছি।”

 এসিয়াবাসী জাতিও রাজনৈতিক উন্নতি লাভ করিতে পারে এই প্রমাণ করিবার জন্য আমরা অনবরত জাপানের দৃষ্টান্ত দিয়া থাকি। কিন্তু জাপান,সমাজ-সংস্কারের জন্য কি কি করিয়াছে তাহা আমরা ইচ্ছা করিয়া বিস্তৃত হই। বিগত শতাব্দীর সত্তরের কোটা পর্য্যন্ত আমাদের ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয়গণের ন্যায় সে দেশের সামুরাই জাতি সমস্ত সুবিধা একচেটিয়া করিয়া রাখিয়াছিল। এতা এবং হিনিন নামে দুইটি অস্পৃশ্য অতিঘৃণিত জাতি ছিল, গ্রামের বাহিরে তাহাদিগকে বাস করিতে হইত। মাদ্রাজ প্রদেশে আজিও কয়েকটি নীচ জাতি এইরূপে ঘৃণিত হইতেছে। ১৮৭১ খ্রীষ্টাব্দের ১২ই অক্টোবর জাপানের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় থাকিবে। কারণ ঐ দিনে সামুরাইগণ নিজেদের দেশভক্তি ও উন্নত হৃদয়ের প্রভাবে স্বেচ্ছায় আপনাদের সর্ব্ববিধ বিশেষ সুবিধা ত্যাগ করিলেন এবং ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে যে সকল অন্যায় প্রভেদ ছিল তাহা উঠাইয়া দিলেন। এইরূপে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতির প্রতিষ্ঠা হইল।

 ১৮৭১ খৃষ্টাব্দে জাপানে যাহা সম্ভব হইয়াছিল, ১৯১৯ খৃষ্টাব্দে এতদিন পরেও ভারতবর্ষে তাহা সম্ভব হইল কৈ? এখনও আমাদের দেশে “বার রাজপুতের তের হাঁড়ি” আর ৫০০ কংগ্রেস প্রতিনিধির জন্য ৫০০টি রাঁধিবার স্থান চাই! এততেও কুলায় না, এর উপর আবার মান্দ্রাজে দৃষ্টি দোষ’ ঘটিয়া থাকে! যদি কোনও ‘পঞ্চম’ শ্রেণীভুক্ত (অর্থাৎ