অত্যাচারিত ও ঘৃণিত হইয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। পৃথিবীর দুইটি প্রাচীন সভ্যজাতি হিন্দু ও ইহুদী নিজের গর্ব্বান্ধতার ফলে আজ এত দীনহীন হইয়া পড়িয়াছে।
তথাকথিত উচ্চশ্রেণীর হিন্দু একথা যেন কখন না ভোলেন যে যদি তাঁহারা তাঁদের অশিক্ষিত দেশভ্রাতাগণকে চণ্ডাল, অন্ত্যজ, পঞ্চমা প্রভৃতি অবজ্ঞাসূচক অভিধানে অভিহিত করিয়া তাহাদের নিকট হইতে দূরে থাকেন তাহা হইলে তাঁহারা সমগ্র হিন্দুজাতির উন্নতির আশা সমূলে নাশ করিবেন। বাংলা দেশের আমরা ২৫ লক্ষ তথাকথিত উচ্চশ্রেণীর হিন্দু সাড়ে চার কোটী অবশিষ্ট হিন্দু ও মুসলমান হইতে পৃথক থাকিয়া নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারিয়াছি। যাহাদিগকে আজ অবজ্ঞা করিতেছি কে বলিতে পারে উপযুক্ত শিক্ষা ও সুযোগ পাইলে তাহাদের মধ্যে অনেক বীর বা জ্ঞানী হইতে পারিত না? শাস্ত্রবিশ্বাসী হিন্দু কি বিস্মৃত হইয়াছেন যে দেবর্ষি নারদ ও ব্রহ্মর্ষি বশিষ্ঠ দাসীপুত্র ছিলেন এবং মহর্ষি ব্যাস ধীবরের কন্যার গর্ভে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। আর এত দিনের কথায়ই বা কাজ কি? মুসলমান-অধিকারের সময়েও ভারতবর্ষে শূদ্র তুকারাম, জোলা কবির, মুচি রুহীদাস, এবং মান্দ্রাজের ঘৃণিত ও অত্যাচারিত পঞ্চমা শ্রেণীভুক্ত সাধুগণের কাহিনী পড়িলে বুঝা যায় জ্ঞান বা ভক্তি কোনো শ্রেণীবিশেষের একচেটিয়া সম্পত্তি নয়! জাতিধর্ম্ম নির্ব্বিশেষে সমস্ত লোকই যে দেশে শিক্ষার অধিকার ও উন্নতির সুযোগ লাভ করিয়া থাকে সেই দেশই অচিরে সর্ব্বসৌভাগ্যশালী হইয়া উঠে।
এই সম্বন্ধে ‘প্রবাসীর’ উক্তি প্রণিধানযোগ্য:—“জ্ঞানে, ধর্ম্মে, চরিত্রাংশে, সাহসে, স্বার্থত্যাগে, ধনশালিতায়, দৈহিক বলে, শিল্পনৈপুণ্যে,—নানাদিকে হীন হইলে, জাতিকে হীন বলে। আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক নিরক্ষর ও অজ্ঞ; পুরুষদের চেয়ে নারীদের