যে হিন্দু সমাজে আদৌ জাতিভেদ ছিল না সেই সমাজ ক্রমে “স্পৃশ্য” “অস্পৃশ্য” নানাজাতিতে বিভক্ত হ’য়ে পড়েছে! জাতিভেদের এই অভিব্যক্তি বা ক্রমবিকাশ একটু আলোচনা কর্তে হবে।
ম্যাক্সমূলার প্রথম সমগ্র ঋক্বেদ প্রকাশিত করেন। তারপর রমেশ দত্ত বেদের বাংলা অনুবাদ করেছেন। সুতরাং সংস্কৃতবিশারদ না হলেও বেদের কথা এখন অনায়াসেই জান্তে পারা যায়। বেবর প্রভৃতি পণ্ডিতগণ বেদের নানাপ্রকার আলোচনা করেছেন। তাঁদের মতে— “Caste is not a Vedic institution” “ঋগ্বেদের যুগে জাতিভেদ ছিল না। আবার বৈদিক যুগের খাওয়া-ছোঁওয়ার বাছবিচার সম্বন্ধে একটা কথা শুনুন, অতিথি সৎকারের জন্য তখন গৃহস্থের বাড়ীতে গরু মারা হ’ত, এই জন্যে অতিথির আর একটি নাম ছিল “গোঘ্ন”। স্বর্গীয় রাজেন্দ্রলাল মিত্র অনেক পুরাতন কথা সংগ্রহ ক’রে “Beef eating in Ancient India” নামক এক প্রবন্ধ লিখেছিলেন। সুতরাং স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে এখনকার খাদ্যাখাদ্য বিচার, স্পর্শদোষে খাদ্যদ্রব্য অপবিত্র হবার ব্যবস্থা, এসব বেদে শ্রুতিতে কোথাও দেখা যায় না। এমন কি ভবভূতির সময়ও গোমাংস ভক্ষণ বিলক্ষণ প্রচলিত ছিল। মহর্ষি বাল্মীকির আশ্রমে মহর্ষি বশিষ্ঠ অতিথি হ’লে ‘জেন আঅদেষু বসিঠ্ ঠমিস্সেসু বচ্ছদরী বিসসিদা’—বাছুর নিহত হ’ল এবং ‘তেন পরাবড়িদেণ জ্জেব সা বরাইআ কল্লাণিআ মড়মড়াইদা’—তিনি এসেই সেই হতভাগ্য বাছুরের অস্থিমাংস মড়মড় শব্দে চর্ব্বণ ক’রে ফেলেন; কেননা ‘সমাংসো মধুপর্ক ইতি আম্নায়ং বহুমন্যমানাঃ শ্রোত্রিয়ার্য়াভ্যাগতার বৎসতরীং মহোক্ষং বা মহাজং বা নির্বপন্তি গৃহমেধিনঃ, তং হি ধর্মসূত্রকারাঃ সমামনন্তি’—মাংস সহিত মধুপর্ক দান কর্বে এই বেদবাক্যের প্রতি সম্মানপ্রদর্শন ক’রে গৃহস্থগণ অতিথিরূপে সমাগত বেদাধ্যায়ী বিপ্র বা রাজন্যের