অভ্যর্থনার জন্য বাছুর ষাঁড় বা রামছাগল প্রদান ক’রে থাকেন—ধর্ম্মসূত্রকারগণ এই রীতিকে ধর্ম্ম ব’লে বিধান দিয়েছেন।—(ভবভূতির উত্তররামচরিত, ৪র্থ অঙ্ক)।
আমরা বলি হিন্দু হ’য়ে বেদের মত অগ্রাহ্য করে এমন কেউ নেই! কিন্তু বেদবিরোধী বিধিব্যবস্থার চাপে ধর্ম্ম যে দেশ ছেড়ে পালাবার উপক্রম করেছেন তা আমরা বুঝেও বুঝ্তে পারি না। শ্রুতি ও স্মৃতি যেখানে পরস্পর বিসম্বাদী সেখানে বিরোধ মীমাংসায় স্মৃতি ছেড়ে দিয়ে শ্রুতির কথাই গ্রাহ্য। কিন্তু আমাদের এমনি দশা হ’য়ে পড়েছে যে আমরা বরং সত্য ও শ্রুতি পরিত্যাগ কর্ব তবুও স্মৃতির অদ্ভুত বিধান ও লোকাচারের কঙ্কালরাশি কিছুতেই ছাড়্তে পার্ব না। বিচার ও যুক্তির বশবর্তী হ’য়ে কোন হৃদয়বান্ ব্যক্তি যদি অর্থহীন নির্ম্মম বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কোন কথা বলেন তবে সমাজ অমনি রক্ত আঁখি হ’য়ে তার কড়া শাসনের জন্যে “একঘরের মস্ত বন্দোবস্ত” কর্তে উদ্গ্রীব হয়ে উঠবেন। বড় দুঃখেই স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন—“ওই যে পশুবৎ হাড়ি ডোম প্রভৃতি বাড়ীর চারিদিকে ঘুর্ছে, ওদের জন্যে,—ওই অধঃপতিত, দরিদ্র পদদলিত গরীবদের জন্যে—তোমরা হাজার হাজার সাধু ব্রাহ্মণ কি করেছ? খালি বল্ছ ছুঁয়োনা আমায় ছুঁয়োনা! এমন সনাতন ধর্ম্মকে কি ক’রে ফেলেছ? এখন ধর্ম্ম কোথায়? খালি ছুঁৎমার্গ—আমায় ছুঁয়োনা ছুঁয়োনা!”—কিন্তু বৈদিকযুগে এই ছুঁৎমার্গের অস্তিত্বই ছিল না; তখন ছিল শুধু বর্ণভেদ।
অনার্য্যেরা ছিল কৃষ্ণকায়, কিম্ভূতকিমাকার। তাহাদের ধনসম্পত্তি কেড়ে নিয়ে সুজলা সুফলা দেশে বাস কর্ল গৌরবর্ণ আর্য্যেরা। অনার্য্যের সহিত সংমিশ্রণ যাতে না হয় তার জন্য আর্য্যেরা সাবধানতা অবলম্বন করেছিল;—উভয়ের মধ্যে বৈবাহিক ক্রিয়া তাই তখন প্রায়ই