বৎসর অধ্যয়ন ক’রে অভিজাত শ্রেণীর সকলপ্রকার রীতিনীতি আচার ব্যবহারের সহিত পরিচিত হয়। এইরূপ লেখাপড়া শিখে গুণী হ’য়ে সে পুরাদস্তুর Gentleman হয়। আমেরিকায় প্রজাশক্তির চূড়ান্ত উন্মেষ হয়েছে; তাই সেখানে দেখা যায় সামান্য কুটীরে জন্মগ্রহণ ক’রে সমাজের সর্ব্বনিম্নস্তর থেকে সর্ব্বশ্রেষ্ঠস্তরে উঠেছিলেন রাষ্ট্রনায়ক মহামতি গারফিল্ড। সে দেশে আজ যে মুটে মজুর খান্সামার কাজ করছে, কাল সে বিদ্যার্জ্জনের জন্যে স্কুল-কলেজে যাচ্ছে। কেউ বা যে-কলেজে চিম্নী পরিষ্কারের কাজ করে সেই কলেজেই আবার পড়্ছে। তার সহপাঠী ক্রোড়পতির সন্তান যদি তাকে অবজ্ঞা বা উপেক্ষা করে তবে সেই ধনী সন্তানকে নানাপ্রকার লজ্জা ও গঞ্জনা সহ্য করতে হয়। সেখানে আজ যে কাঠ কাটে আর একদিন সে দেশের রাষ্ট্রনায়ক (President) হবার আশা রাখতে পারে। সুতরাং এমন বড় কুলীন সেখানে কে আছে যে তাঁকে কন্যাদান করবে না? আমি এখানে পাশ্চাত্য সমাজ-নীতির বিচার করছি না, আমার প্রতিপাদ্য এই যে পাশ্চাত্যদেশের জাতিভেদ ও ভারতবর্ষের জাতিভেদের মধ্যে তফাৎ অনেক। আমাদের দেশে জাতিভেদপ্রথা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধ’রে মানুষকে মানুষ ব’লে স্বীকার করেনি; আপন ভাইকে পর ক’রে দিয়েছে; তার মনুষ্যত্বের অবমাননা করেছে; সে তুচ্ছ ঘৃণ্য, সে অযোগ্য ও জঘন্য, এই কথাই প্রচার ক’রে এসেছে। কিন্তু পাশ্চাত্যদেশের জাতিভেদ মানুষে মানুষে ব্যবধানের এমন অনুল্লঙ্ঘনীয় প্রাচীর তুলে দেয়নি, মানুষের উন্নতি ও বিকাশের পথে এমন অন্তরায় হয়নি।
বাংলাদেশের লোকসংখ্যা এখন সাড়ে চার কোটী। তার মধ্যে ব্রাহ্মণ কায়স্থ বৈদ্য মিলে মোট ২৩ লক্ষ মাত্র। সমস্ত লোকসংখ্যার তুলনায় এঁরা কজন? সামান্য ভগ্নাংশ মাত্র। কিন্তু লেখাপড়া জ্ঞানের