প্রতিনিধি বাগিয়ে নিচ্ছেন। এই সকল মতামতের ভালমন্দ আলোচনা কর্বার জন্য আমি একটা কথাও বল্ছি না। আমি বল্তে চাই এই যে এদিকেও আমাদের সামাজিক সঙ্কীর্ণতা ও পাপের প্রায়শ্চিত্ত হচ্ছে। যে অধিকারটুকু ইংরেজ আমাদের দিতে চায় আমাদেরই দেশবাসী আজ তাতে আপত্তি তুল্ছে,—কেন না আমরা অনেক কাল ধ’রে তাদের ঘৃণা করেছি এবং এখনও কর্ছি; তাই তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের উপর বিশ্বাস হারিয়েছে।
জাতির গঠন ও বিকাশে এই জাতিভেদ অনেক পরিমাণে বাধা দিয়েছে। পরস্পরের মধ্যে বিবাহের আদানপ্রদান নেই; তার উপর “ছুঁয়োনা ছুঁয়োনা” এই রব কর্তে কর্তে সকলেই এক-একটা গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ হ’য়ে পড়েছে। হিন্দুমুসলমান ত বরাবরই আলাদা হ’য়ে আছে। এ অবস্থায় কবি ভাবের আবেগে ব’লে থাক্তে পারেন “একবার তোরা জাতিভেদ ভুলে” ইত্যাদি। কিন্তু এতদিনের বন্ধন এককথায় খ’সে পড়্বে কি? আমার লিখিত “হিন্দু রসায়নশাস্ত্রের ইতিহাস” (History of Hindu Chemistry) নামক পুস্তকের “বিজ্ঞান ও শিল্পের অবনতি” (Decline of Science) শীর্ষক অধ্যায়ে আমি জাতি সম্বন্ধে কয়েকটা কথা বলেছি। চরক ও সুশ্রুত দেশীয় চিকিৎসা প্রণালীর দুখানি মহাগ্রন্থ। এতে অবস্থা-বিশেষে এমন কি গোমাংস খাবারও কথা আছে। সুশ্রুতে শবব্যবচ্ছেদের রীতিমত ব্যবস্থা ছিল; কিন্তু মনু মহাশয় বলেন শবস্পর্শ হ’লে জাতিচ্যুত হ’তে হবে। সুতরাং ব্যবস্থা হ’য়ে গেল শবব্যবচ্ছেদের স্থানে অতঃপর লাউ ব্যবচ্ছেদ হবে; অর্থাৎ লাউ কেটে মনুষ্য-শরীরের শিরা-উপশিরা প্রভৃতির সংস্থান জানতে হবে। ব্যবস্থাটা কতকটা সেই কলাগাছ বিয়ে কর্বার মত নয় কি? জাতিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে এমনি ক’রে