অন্তর সমৃদ্ধ হ’য়ে অদূর ভবিষ্যতে নানাকর্ম্মে বৈচিত্র্যে বিকাশলাভ করবে না কি? দেশীয় রাজ্যের একজন সুপ্রসিদ্ধ রাজনীতিজ্ঞ সার টি মাধব রাও হিন্দু সমাজের বৈষম্যকে লক্ষ্য ক’রে বড় দুঃখে বলেছেন—এই সব বৈষম্য ও তজ্জনিত ক্লেশ আমরা আপন হাতে সৃষ্টি ক’রে আপনার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছি। সুতরাং সভ্যভাবে চেষ্টা করলে এর প্রতিবিধানও আমাদের আপনারই হাতে!—আমাদের যুক্তি নেই, বিচার নেই, কুফলপ্রসু অতি তুচ্ছ লোকাচারকে আমরা মনু, রঘুনন্দন প্রভৃতি দোহাই দিয়ে সাগ্রহে আঁকড়ে থাকি। “কেন” ব’লে কেউ যদি প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ করে, তাহলে তৎক্ষণাৎ জবাব দিই—“কি আশ্চর্য্য! ও যে চিরকাল হ'য়ে আস্ছে গো!” আমরা বিলাতী বিস্কুট খাবো, বরফ দিয়ে সোডা লেমনেড খাবো, কিন্তু জাতিবিশেষের কেউ যদি হাতে ক’রে এক গ্লাস জল দেয় অথবা আমাদের চৌকাঠ মাড়ায় তাহলে অমনি চীৎকার—“জাত গেল, হাঁড়ি ফেল, স্নান কর!” অদ্ভুত ব্যাপার! তারই ফলে আমরা ব্রাহ্মণ-শূদ্র মিলে সকল জাতিটাই বিদেশের অগ্রসর জাতিদের কাছে হেয় অস্পৃশ্য অপাংক্তেয় হয়ে আছি। যতকাল নিজেদের স্বভাব শোধন না করব, ততকাল এমনি থাক্তে হবে। সুতরাং সাধু সাবধান!
পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৮১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫০
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী