অবজ্ঞা। কেবল দেখান—তুই নীচ জাতি, আমি উচ্চ জাতি। সবাই মায়ের সন্তান—সকলকে কোলে টেনে নিতে হবে। যে পেছনে আছে তাকে তুল্তে হবে। যিনি শিক্ষিত তিনি অশিক্ষিতকে টেনে নেবেন। বিবেকানন্দ বলেছেন—“হিন্দুধর্ম্ম দেশাচারে, লোকাচারে পরিণত। ধর্ম্ম এখন আশ্রয় নিয়েছেন—জলের কলসী ও ভাতের হাঁড়ির ভিতর।”
এই কি হিন্দু ধর্ম্ম? হিন্দুধর্ম্ম সার্ব্বভৌমিক ছিল। জন্মগত গরিমা সর্ব্বনাশের মূল হয়েছে। কুলীন ব্রাহ্মণের বিদ্যাশিক্ষার দর্কার নেই। যিনি কুলীন, তিনি বিয়ে ক’রে ৩৪ হাজার টাকা রোজ্গার করেন। এতে অনেক স্থলে অবনতি হয়েছে। জগতের, ইতিহাস দেখুন! যীশুখৃষ্ট ছুতোর, কবীর জোলা। জগৎ নত মস্তকে তাঁদের ধর্ম্ম গ্রহণ করেছে। মান্দ্রাজেও পারিয়া পীর দেখা যায়। ভারতে এক সময়ে চরিত্র দেখে স্বাধুদের পূজা হত। এখন সম্মান জন্মগত হয়েছে। এ আর বেশী দিন টিক্বে না। এখন হচ্ছে from log cabin to white house, অর্থাৎ পুরুষকার ও গুণের আদরের দিন। লয়েড্ জর্জ্জ “জুতিসেলাই”এর পালিত পুত্র। উইলিয়াম কেরি—যিনি এক হিসাবে বাঙ্গালা গদ্যের সৃষ্টিকর্ত্তা, তিনিও—জুতিসেলাই। এইখানে একটা কথা মনে পড়্ল। একবার লর্ড ওয়েলস্লি অনেক গণ্যমান্য সাহেবকে নিমন্ত্রণ করেন। সে ভোজের সভায় কাউন্সিলের অনেক মেম্বরও উপস্থিত ছিলেন। কেরিকে দেখে একজন পার্শ্বের বন্ধুকে কাণে কাণে বল্লেন—“Hallo, Carey is here. Is he not a shoemaker? ওহে, কেরি এসেছে যে! ও জুতা গড়ে না?” কেরি তা শুন্তে পেয়ে বলে উঠ্লেন—“Beg your pardon, sir, I was not a shoemaker but a cobbler মাপ কর্বেন মশাই, আমি জুতা গড়ি না, ছেঁড়া জুতা মেরামত করি।” ইংলণ্ডে জাতিভেদ আছে