পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬৮ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্ততাবলী তারপর সুপ্রচলিত ‘নেশন’ শব্দটির ( আমাদের দেশের অবস্থা বিবেচনা ক’রে ) বিচার করা যাক। বাঙলা হিন্দু-মুসলমানের দেশ– উভয়ের মাতৃভাষা এক—বাঙলার হাওয়ায়, স্বজন্মা-অজন্মায়, সুখে দুঃখে, আমরা অনেকটা এক বটে। কিন্তু ধর্ম্মে আমরা পরস্পর থেকে পৃথক। হিন্দুর মধ্যে আবার নানা-প্রকার উপজাতি সব আছেন। এখন একটা ক্ষণিক আবেগের বশে আমরা হিন্দুমুসলমান এক হয়েছি বটে, কিন্তু এই একত্ব কি দৃঢ়ভিত্তির উপর স্থাপিত হয়েছে ? একদিনেই বনিয়াদ পাকা হ’য়ে যাবে এমন আশা অবশু আমি করি না। তবু আপনাদের এই মিলনকে সত্যবস্তু ক'রে তোলার জন্যে আমরা বাস্তবিক কি কোন সভ্য চেষ্টা করছি ? দিল্লীর জুম্মা মসজিদে হিন্দু সন্ন্যাসী আপন মর্ম্মকথা ব্যক্ত করেছেন। হিন্দু মুসলমান তা শুনেছে—মহামতি তিলকের শবদেহ হিন্দু মুসলমান মিলে বহন করেছে। সকলে সে অপূর্ব্ব দৃশ্ব দেখেছে। এ-সকলই আশার কথা । কিন্তু এ সম্মিলন স্থায়ী হবে কি ? এখনই ভেদনীতির কার্ষ্য আরম্ভ হয়েছে । আলিগড়ে মুসলমান বিশ্ববিদ্যালয়, বারাণসীতে हेछ বিশ্ববিদ্যালয়, আবার লক্ষেী সহরে শিয়া মুসলমানদের জন্ত স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় । কেন এই স্বাতন্ত্র্য ? সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান, ইতিহাস প্রভৃতি মানুষের অবশুশিক্ষণীয় বিষয়ে এমন কি বস্তু আছে যা হিন্দু মুসলমান আপন আপন ভাইএর মত পাশাপাশি বসে শিখতে পারে না ? , হিন্দু মন্দিরে পূজা করেন, মুসলমান মসজিদে উপাসনা করেন। কিন্তু শিক্ষামন্দিরে যদি আমরা হিন্দুমুসলমান এক আসনে বসতে না পারি, তবে কি ক’রে বলি যে আমরা ভাই ভাই হয়ে মিলতে চেষ্টা করছি। আমরা যে ইচ্ছা ক'রে বুদ্ধির দোষে পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যাচ্ছি। কোথায় সার্ব্বভৌমিকতা ও উদারতার প্রতিষ্ঠা