৮
মিথ্যার সহিত আপোষ
ও শান্তি ক্রয়
ইংরাজী ১৮৮৯ সালে সাধারণ ব্রাহ্মসমাজ মন্দিরে আমি একটী বক্তৃতা দিয়াছিলাম। তাহার সার কথা এই ছিল যে, আমরা বাঙ্গালী—আমাদের জীবনকে প্রধানতঃ দুই ভাগে বিভক্ত করা যাইতে পারে; (১) পোষাকী জীবন ও (২) আটপৌরে জীবন। যখন আমরা টাউন হলে ও বড় বড় সভায় বজ্রগম্ভীর স্বরে বক্তৃতা করি, বলি— সমাজ-সংস্কার করিব, অর্থনৈতিক সমস্যা দূর করিব, বাল্য-বিবাহ বন্ধ করিব, বিধবা-বিবাহ প্রচার করিব তখন আমরা ‘পোষাকী’ জীবনের পরিচয় দিই; বাড়ীর ভিতর প্রবেশের সময় পোষাক ছাড়িয়া আসি— কথায় ও কার্য্যে বিপরীত আচরণ করি; ‘আটপৌরে’ জীবনের মধ্যে পড়িয়া ‘পোষাকী’ জীবনের কথা ভুলিয়া যাই।
এই বক্তৃতার পর এক শতাব্দীর এক তৃতীয়াংশেরও বেশী সময় অতিবাহিত হইয়াছে। দেখা যাউক, এই ৩৫/৩৬ বৎসরের মধ্যে আমরা কোন্ বিষয়ে কতদূর সংস্কার সাধন বা উন্নতি লাভ করিতে পারিয়াছি। যাঁহারা শিবনাথ শাস্ত্রী প্রণীত রামতনু লাহিড়ীর জীবন-বৃত্তান্ত, রাজনারায়ণ বসুর আত্মচরিত, যোগীন্দ্র বসু কৃত মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনচরিত প্রভৃতি পড়িয়াছেন তাঁহারা জানেন হিন্দু কলেজের বাল্যাবস্থায়, ডি রোজীও প্রভৃতি অধ্যাপকগণের সংস্পর্শে আসিয়া ও তাঁহার শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হইয়া তখনকার ছাত্রগণ কি রকম মত্ত হইয়াছিল। পরলোকগত রেভারেণ্ড কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি তখন হিন্দু সমাজের ভিতর বসিয়া, শুধু গোমাংস ভক্ষণ করাই যে