১৷৹
ভগবানকে কাতর ভাবে সর্ব্বদাই অন্তরের বেদনা জানাইতেছেন,—“আমি মরি হে মুরারি, দুখ নাই অন্তরে গো”, কে আমার এই আরদ্ধ কর্ম্মের স্রোত বহমান রাখিবে?
দেবতার অনুগ্রহে তাঁহার ও দেশের মুখরক্ষা হইল! পূর্ব্বে কোন কোন ছাত্র তাঁহার সহিত সামান্য ভাবে গবেষণায় নিয়োজিত হইলেও, তাঁহাদের কার্য্য স্থায়ী হয় নাই। কিন্তু বাস্তবিক স্রোত ফিরিল ১৯১০ সাল হইতে, যখন শ্রীযুক্ত জিতেন্দ্রনাথ রক্ষিত প্রমুখ ছাত্রগণ আসিয়া প্রেসিডেন্সি কলেজের নির্জ্জন লেবরেটারী মুখরিত করিয়া তুলিলেন। যতীন্দ্রনাথ সেন, জিতেন্দ্রনাথ রক্ষিত, হেমেন্দ্রকুমার সেন, নীলরতন ধর, রসিকলাল দত্ত, বিমানবিহারী দে, জ্ঞানেন্দ্রচন্দ্র ঘোষ, জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখার্জি, মেঘনাদ সাহা প্রভৃতি কৃতী ছাত্র নানা মৌলিক প্রবন্ধে য়ুরোপ ও আমেরিকার বৈজ্ঞানিক পত্রগুলির স্তম্ভ পূরণ করিতে লাগিলেন। দিন দিন নূতন আবিষ্ক্রিয়া দ্বারা বাঙ্গালী মস্তিষ্কের উর্ব্বরতার সাক্ষ্য বাহিরে প্রচারিত হইতে লাগিল। প্রফুল্লচন্দ্র হিন্দু রসায়নীবিদ্যার ইতিহাস সঙ্কলনকালে বাঙ্গালীর জড়ত্ব সম্বন্ধে যে হতাশ ভাব প্রকাশ করিয়াছিলেন দশ বৎসরের মধ্যেই তাহা পরিবর্ত্তিত হইয়া তাঁহাকে পুনরায় আশার সঙ্গীত গাহিতে হইল।
প্রেসিডেন্সি কলেজে কার্য্যারম্ভ করিবার পর, প্রফুল্লচন্দ্র পিতৃঋণের জন্য বিশেষ ব্যতিব্যস্ত হইয়া পড়েন। নিজ অসাধারণ মিতব্যয়িতার ফলে তিনি তিন বৎসরে প্রায় ৪০০০৲ টাকা পিতৃঋণ পরিশোধ করেন এবং কলিকাতায় নিজ খরচা বাদে ৮০০৲ শত টাকা বাঁচাইয়া তাহা দ্বারা ১৮৯২ সালে বেঙ্গল কেমিক্যাল ওয়ার্কসের পত্তন করেন। এই সময় ইনি জগদীশচন্দ্রের বাটী হইতে আসিয়া ৯১ নম্বর অপার সার্কুলার রোডের বাটীতে অবস্থিতি করিতে থাকেন। এইখানেই বেঙ্গল