সহিত আপোষ করিতে করিতে বিবেক-বুদ্ধি ও সাহস হারাইয়াছি— সমাজের ভিতর ভণ্ডামি ও কপটাচরণের অন্তঃসলিলা প্রবাহিত হইবার পথ পরিষ্কার করিয়া দিতেছি। ‘স্বরাজ’ ‘স্বরাজ’ বলিয়া চীৎকার করি— বলি, স্বরাজের উপর আমাদের জন্মগত অধিকার। কিন্তু আমাদের সমাজ বিশ্লেষণ করিলে দেখিতে পাই—সমাজের রীতিনীতির পনের আনাই ফাঁকি—মানুষের গড়া মানুষ-মারা কল। আমরা চাই রাজনীতিক অধিকার লাভ করিতে— কিন্তু যাহারা আমাদের মুখের দিকে চাহিয়া আছে, আমরা যাহাদের উন্নতিপথের সহায়ক, যাহাদের সহিত জাতীয় উন্নতি ওতঃপ্রোতভাবে জড়িত—তাহাদিগকে আমরা অবহেলা করিয়া আসিতেছি। ১৯১৮ সালে, Indian Social Conference এর সভাপতির অভিভাষণে বলিয়াছিলাম, “It is the women of India who really belong to the depressed class” —আমাদের দেশের স্ত্রীলোকেরাই প্রকৃতপক্ষে অনুন্নত জাতিভুক্ত। মাতৃজাতির অজ্ঞানতা দূর করিবার মত সাহস ও প্রচেষ্টা আমাদের নাই—কোন্ মুখে আমরা স্বরাজ লাভের যোগ্য বলিয়া মনে করি?
যুবকেরাই জাতির প্রাণ—জাতির জীবনীশক্তি। তাই আশা হয় বাঙালী মস্তিষ্কের অপব্যবহার হইবে না। যে দেশে বিধির বিধানে মহাপুরুষেরা জন্মগ্রহণ করিয়াছেন—ভগবানের নিকট প্রার্থনা করি, সেই দেশের যুবকেরা মহাপুরুষদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হইয়া ত্যাগ ও বীরত্বের মহিমায় বাঙালী জাতিকে উজ্জ্বল করুন—ঈশ্বরের শক্তি যেন তাঁহাদের জীবনের পথে চিরসহায় হয়।