পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাধনা ও সিদ্ধি
২০৯

ছিলেন। নেটাল প্রদেশে তিনি তাদের সঙ্গে তুল্য-ভাবে নিগৃহীত, নিপীড়িত, লাঞ্ছিত ও অত্যাচারিত হয়েছিলেন। মাসে ৫/৬ হাজার টাকা আয়ের ব্যারিষ্টারী তিনি স্বেচ্ছায় ত্যাগ করে সবার ব্যথাকে বুক পেতে দিয়ে গ্রহণ করেছিলেন। কতবার জেলে গেছেন, কত কষ্ট সহ্য করেছেন, মেথরের কাজ পর্য্যন্ত করেছেন। তাই ত তিনি আজ জনসাধারণের হৃদয় মন অধিকার কর্‌তে পেরেছেন। আজ অন্তঃত ২৭/২৮ বৎসর যাবৎ তিনি নিগৃহীত ভারতবাসীর নেতা—যেখানে অত্যাচার উৎপীড়ন, সেইখানেই মহাত্মা গান্ধী; তাই আজ তাঁর নামে দলিত জনসঙ্ঘের প্রাণ আনন্দে নেচে ওঠে-আশায় উৎফুল্ল হয়। এই অনন্যপ্রতিদ্বন্দ্বী-প্রভাবের পশ্চাতে রয়েছে মহাত্মাজীর আজীবন সাধনা |

 রামমোহন রায়কে বাঙালীর ঘরে পাঠানো বিধাতার একটি বিশেষ বিধান বলে আমার মনে হয়। আমার স্থির বিশ্বাস, বাঙালীর দ্বারাই ভারতের সর্ব্বাঙ্গীন উন্নতি সাধনের পথ উন্মুক্ত হবে। কিন্তু এই গৌরবের পদ অধিকার কর্‌তে হলে বাঙালীর জীবনে আজ চাই সাধনা —তিল তিল করে’ আত্মদান। বাঙ্গালী আজ স্থিরপ্রতিষ্ঠ ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ব্যক্তিগত সুখের আশায় জলাঞ্জলি দিয়ে দেশের কাজে লেগে পড়ে থাক্‌লে ভারতের নিদারুণ দুর্দ্দশা ঘুচ্‌বেই। আজ বিধাতার ইঙ্গিত—বাঙালীর সাধনা ভারতের সিদ্ধি আনয়ন কর্‌বে।