১॥৶৹
সংগ্রহ করিয়াছিলেন। আচার্য্যের দানশীলতার কথা বাংলা দেশে সকলেই অবগত আছেন—তাই দেশবাসী বিশ্বাস করিয়া তাঁহার হাতে তিন লক্ষ টাকা অনায়াসেই প্রদান করিয়াছিল।
এই সময় অসহযোগ আন্দোলন প্রবল বেগে প্রবাহিত হইতেছিল এবং মহাত্মা গান্ধী চরকা-মন্ত্র প্রচার করিতেছিলেন। আচার্য্য রায় প্রথমে চরকা ও খদ্দরের পক্ষপাতী ছিলেন না। খুলনার দুর্ভিক্ষ তাঁহার মতের পরিবর্ত্তন ঘটায়। দুর্ভিক্ষের প্রকোপ প্রশমিত হইলে তিনি চিন্তা করিতে লাগিলেন, দুর্ভিক্ষ পীড়িত লোকদিগকে কি কার্য্য দেওয়া যাইতে পারে যাহাতে তাহারা সমস্ত দিন ব্যাপৃত থাকিয়া স্ব স্ব জীবিকার সংস্থানেও সক্ষম হয়। তিনি দেখিলেন যে দুর্ভিক্ষ পীড়িত নরনারীরা অবসর সময়ে চরকা কাটিলে, তাহাদের অনেক সাহায্য হইবে। এই সময়ে তিনি চরকা-মন্ত্রে দীক্ষিত হইলেন এবং তাঁহার অদম্য চেষ্টা ও উৎসাহে খুলনার ঘরে ঘরে চরকা চলিতে লাগিল। আচার্য্য রায়ের দেশ সেবা এই খানেই শেষ হইল না। শীঘ্রই দেশ সেবার অন্য সুযোগ তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত হইল।
১৯২২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে উত্তর-বঙ্গে ভীষণ বন্যা হয়। বন্যাপীড়িত নরনারীর দুঃখ দুর্দ্দশার কথা চিন্তা করিয়া প্রফুল্লচন্দ্র স্থির থাকিতে পারিলেন না। তিনি কলিকাতাবাসীকে এক মহতী সভায় আহ্বান করিয়া “বেঙ্গল রিলিফ কমিটি” নামে একটী কমিটী সংগঠন করিলেন। বন্যা পীড়িতদের সাহায্যের সকল ভার ও বন্দোবস্ত এই কমিটির হস্তে অর্পণ করিয়া তিনি কার্য্যে অগ্রসর হইলেন। শুধু বাংলা দেশ নয়, বোম্বাই, মাদ্রাজ প্রভৃতি ভারতের নানা প্রদেশ হইতে এই কার্য্যে তিনি আশাতীত সাহায্য পাইয়াছিলেন। সুদূর প্রবাসী ভারতবাসীগণও তাঁহাকে এই কার্য্যে সাহায্য করিয়া-