পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪২
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

ধারণ করতে হয়। Philip II এর মতো নরপতির সঙ্গে তারা অবহেলে যুদ্ধ করল। William the Silent ছিলেন তাদের নেতা। ডাচেরা সংখ্যায় মুষ্টিমেয়, ফিলিপের অজস্র সম্পদ,—মেক্সিকে, পেরু খনি হতে রাশীকৃত রূপা তার আয়ত্তাধীন কিন্তু তবুও ডাচদের কাছে পরাজয় স্বীকার করতে হল। কেননা, বাণিজ্যজীবী ডাচেরা স্বাধীনতার প্রকৃত মর্ম্ম জানত।

 আমাদের গৃহের আবহাওয়া আমাদের চরিত্রগঠনোপযোগী নয়। আনন্দময় গৃহের প্রভাব জীবনকে সুগঠিত করে কিন্তু আমাদের যুবকগণ গৃহের শত দৈন্য প্রভৃতিতে অকালে ভারাক্রান্ত হয়ে উদ্যম শক্তি হারিয়ে ফেলে। স্যাডলার বলেছেন যে তিনি বাঙালী যুবককে হাসতে দেখেন নাই। আশ্চর্য্য হবার কোন কথা নয়। বাড়ীতে গুরুজনদের দিবা রাত্র শত অভারের আলোচনা শুনে যুবকগণ হৃদয়ে বল হারিয়ে ফেলে। তারপর, নানা সামাজিক কুসংস্কারও এইরূপ অবস্থার জন্য কম দায়ী নয়। সামাজিক কুপ্রথার কথা আলোচনা করে কোন ফল নাই। আমরা Spiritual জাতি—ইউরোপীয়রা জড়বাদী। আমাদের আর কিছু শিখিবার, সংশোধন করিবার নাই। রাস্তায় কুষ্ঠ রোগী দেখে আমরা পূর্ব্বজন্মার্জ্জিত পাপের ঘাড়ে বেচারার রোগ যন্ত্রণা চাপিয়ে রেহাই পাই কিন্তু জড়বাদী ইউরোপীয়রা নিজের জীবন তুচ্ছ করে তাদের সেবা করে। মরে আমাদের জাত ভায়েরা কুষ্ঠ রোগে, আর পরমাধ্যাত্মিক আমরা দূরে পলায়ন করি, সেবা করে বিধর্ম্মী জড়বাদী ওরা। দেশের প্রায় সমস্ত কুষ্ঠাশ্রম গুলিই তো ওদের। ওরাই আবার সাঁওতাল পরগণার ঘোর অরণ্যে যেয়ে সাঁওতালদের মানুষ করছে। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন “আমাদের spirituality অকর্ম্মণ্যতার অজুহাত মাত্র।”