১॥৶৹
ছিলেন। ভিক্ষালব্ধ প্রায় দশ লক্ষ টাকা তিনি তাঁহার যুবকমণ্ডলীর সাহায্যে বন্যাপীড়িতদের দুঃখ দূর করিতে ব্যয় করিয়াছিলেন।
১৯২২ সালে বিজ্ঞান চর্চ্চার জন্য আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে দশ হাজার টাকা দান করেন। তাঁহার জীবনের সঞ্চিত অর্থের অধিকাংশই এই কার্য্যে দান করিয়া তিনি অপূর্ব্ব দানশীলতার পরিচয় দিয়াছেন। ১৯২৫ সালে বক্তৃতা দিবার জন্য নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয়, আচার্য্য রায়কে আহ্বান করেন। পারিশ্রমিক হিসাবে সমস্ত প্রাপ্য টাকা তিনি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রত্যর্পণ করেন। বিজ্ঞান-মন্দিরের স্থাপনার প্রারম্ভ হইতেই আচার্য রায় রসায়নশাস্ত্রের পালিত অধ্যাপকরূপে নিযুক্ত আছেন। পালিত ট্রাষ্টের নিয়মানুসারে অধ্যাপকের ষাট বৎসর বয়স হইলে কর্ম্মত্যাগ করা দরকার—তবে ট্রাষ্টিরা ইহার ব্যতিক্রম করিতে পারেন। ষাট বৎসর পূর্ণ হইলে আচার্য্য রায় পদত্যাগ-পত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় তাঁহাকে আরও পাঁচ বৎসরের জন্য অধ্যাপক নিযুক্ত করেন। এই সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে যে পত্র লিখিয়াছিলেন—তাহাতে তাঁহার হৃদয়ের মহত্ত্বই প্রকাশ পায়। তিনি লেখেন—“আমার জীবনের বাকী দিন গুলি বিজ্ঞানমন্দিরের পরীক্ষাগারে কাটাইয়া দিতে খুবই ইচ্ছা করি, কিন্তু এই কাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট হইতে আর পারিশ্রমিক গ্রহণ করিতে আমি অক্ষম। সেই জন্য আমার নিবেদন যে পালিত অধ্যাপকের প্রাপ্য মাসিক এক হাজার টাকা আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রত্যর্পণ করিতেছি, যাহাতে এই টাকা বিজ্ঞান মন্দিরে রাসায়নিক বিভাগে ব্যয় হইতে পারে।” তাঁহার জীবনের শ্রেষ্ঠ দান খাদি-প্রচারের জন্য। তিনি আজীবন প্রায় ৫৬০০০৲ টাকা—‘বেঙ্গল কেমিক্যাল’ ও অন্যান্য কোম্পানীর ‘শেয়ার’ সঞ্চয় করিয়াছিলেন।