কাজ কিরূপ হইতেছে তৎপ্রতি কেহ একবার চাহিয়াও দেখেন না। তবে, বর্ত্তমান বড় লাট মহোদয় শিক্ষাকল্পে যে ত্রিশ লক্ষ টাকা ব্যয় করিবেন বলিয়াছেন, তাহার ৯ লক্ষ শুধু বাঙ্গালার প্রাথমিক ও উচ্চ ইংরাজী স্কুলের শিক্ষকের অবস্থার উন্নতির জন্য ব্যয়িত হইবে। ইহা আমাদের পক্ষে একটা আশা কথা। আমাদের যথার্থ যাহা প্রয়োজন তাহা বুঝিয়া এই টাকাটা খরচ করিলে বাংলার যথেষ্ট লাভ হইবে।
জনসাধারণের শিক্ষার উন্নতি বিধান জনসাধারণের উপর বেশীর ভাগ নির্ভর করে। আমরা আমাদের জন্য যতটা করিতে পারি, অন্য কেহ কখনও ততদূর করিতে পারে না। আমাদের ধনী ও শিক্ষিত লোকদিগের এদিকে দৃষ্টি দেওয়া উচিত। আমরা বিবাহ, শ্রাদ্ধ, তীর্থপর্য্যটন ও অন্যান্য কার্য্যে অজস্র অর্থ অকাতরে ব্যয় করি। ধর্ম্মের নামে যে কত টাকা দেবালয়ে ও মঠে উৎসর্গীকৃত রহিয়াছে ও হইতেছে তাহার কে ইয়ত্তা করিবে? অথচ গ্রামের স্কুলের উন্নতির জন্য চেষ্টা করিয়া অর্থ যোগাড় করা অত্যন্ত কঠিন। লোক শিক্ষার সহায়তা যে ধর্ম্মসাধনের একটী প্রধান অঙ্গ, তাহা সমাজের অনেকেই বুঝেন না। আমাদের আর একটা দুর্দ্দশার কারণ এই যে শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে অধিকাংশই গ্রাম ছাড়া। যে পল্লীগ্রামে তাঁহারা লালিত ও বর্দ্ধিত হইয়াছেন, যাহার নিকট তাঁহারা ঋণী, এখন ম্যালেরিয়ার প্রকোপে ও অর্থান্বেষণের বাতিকে, তাঁহারা কদাচিৎ সেই পল্লীগ্রামে পদার্পণ করেন। তাঁহারা মায়া কাটাইয়াছেন বলিলেই চলে। ফলে যাঁহারা সচরাচর পল্লীগ্রামে থাকেন তাঁহাদের মধ্যে শিক্ষার প্রভাব সম্যক্রূপে হৃদয়ঙ্গম করেন, এরূপ লোক খুব অল্প। তাঁহাদের জীবনের সমস্ত