ধর্ম্মপুস্তক পাঠ করা ইত্যাদি। শিক্ষক উপদেশ দ্বারা, বিশেষতঃ নিজের দৃষ্টান্ত দ্বারা, ছাত্রকে ধর্ম্মপথে চলিতে উৎসাহিত করিবেন। প্রসঙ্গক্রমে বলিতে চাই, নৈতিক শিক্ষাসম্বন্ধে আমাদের ব্রহ্মচর্য্য নামক প্রাচীন শিক্ষা প্রণালী হইতে এখনও অনেক শিখিবার আছে।
উপসংহারে আমার বক্তব্য এই, যাঁহারা এই মহান্ কার্য্যে ব্রতী হইয়া জীবন উৎসর্গ করিয়াছেন, তাঁহারা যেন সর্ব্বদাই মনে রাখেন, যে দেশের মঙ্গলের জন্য ঈশ্বরের প্রেরণায় কার্য্য করিতেছেন। পল্লীগ্রামের কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস, দলাদলির মধ্যে তাঁহাদের জীবনের উচ্চ আদর্শ, ছাত্রদিগকে যেন সতত মঙ্গলের দিকে চালিত করে। আমার বিশ্বাস যে, আমাদের দেশ এখনও এত অধঃপতিত হয় নাই, যে দেশের লোকে বিদ্যা ও বিদ্বানের আদর করিবে না।
“স্বদেশে পূজ্যতে রাজা, বিদ্বান্ সর্বত্র পূজ্যতে” প্রাচীন নীতিবিশারদের এই উক্তি, পূণ্যভূমি ভারতবর্ষের উপর এক সময় প্রযুজ্য ছিল। বর্ত্তমান সময়ের শিক্ষকেরা সাধারণের দৃষ্টির অগোচরে ও অন্তরালে, নীরবে যে কাজ করিতেছেন, তাহার গুরুত্ব ও মহত্ত্ব প্রত্যেক সহৃদয় ব্যক্তিই হৃদয়ঙ্গম করিবেন। এই কার্য্যে তাঁহাদের যথেষ্ট যশ কিংবা খ্যাতি হইতেছে না বলিয়া যেন তাঁহারা অবসাদ সাগরে নিমজ্জিত না হন।
এই সময় আমার কর্ম্মবন্ধু পরলোকগত মহাত্মা গোখলের কথা মনে হইতেছে। তিনি বিশ বৎসর ধরিয়া মাত্র ৭৫৲ টাকা বেতনভুক্ শিক্ষক থাকিয়াও স্বদেশ প্রেমিক ও রাজনীতিজ্ঞদের মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করিয়াছিলেন। প্রতিভাশালী শিক্ষকদের মধ্যে যে কেহ ইচ্ছা করিলে গোখলের মত উচ্চস্থান অধিকার করিতে পারেন। যুক্তরাজ্যের বর্ত্তমান প্রেসিডেণ্ট উড্রো উইলসনও একজন শিক্ষক।