পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/২৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৮
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

 আমি—লণ্ডনের মত বড় সহরে মানুষ এক পাড়া হইতে আর এক পাড়ায় উঠিয়া গেলে খুঁজিয়া পাওয়া ভার। মনে কর যদি বই ফিরাইয়া না দিয়া এ পাড়া হইতে উঠিয়া যায়, তাহা হইলে বই কি করিয়া পাইবে?

 এই প্রশ্নে আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া তাহারা বলিল, “তা কি করিয়া হইতে পারে? এ যে আমাদের বই? উঠিয়া যাইবার সময় ফিরাইয়া দিতেই হইবে।”

 আমি—মনে কর যদি না দেয়!

 তাহারা হাসিয়া কহিল, “সে হতেই পারে না”। বই না দিয়া যে কেহ চলিয়া যাইতে পারে—ইহা যেন তাহাদের ধারণাই হয় না।

 আপনারা হাজারখানা বই নিয়ে লাইব্রেরী করুন, মাসিক চাঁদা দু আনা। দেখ্‌বেন মাসে মাসে অনেক বই ফাঁক হ’য়ে যাবে।

 জগতে দেখা যায় যাঁরা বিদ্যাভ্যাস প্রকৃত করেছেন তাঁরা অনেকেই Self-taught অর্থাৎ নিজের চেষ্টায় শিখেছেন। ডাক্তার জন্‌সনের মত বিদ্বান বিরল। তাঁর অবস্থা ভাল ছিল না, কিন্তু তাঁর পিতার পুস্তকের দোকান ছিল। তিনি পাঠাগার থেকে কোনো বই নিতেন আর একটি উচ্চস্থানে ব’সে একমনে পড়্‌তেন। এইরূপ চেষ্টায় তিনি অগাধ পাণ্ডিত্য অর্জ্জন করেছিলেন। নব্য বাংলার অভ্যুদয়ের প্রধান উৎস রাজা রামমোহন রায়, রংপুরের ম্যাজিষ্ট্রেট ডিগ্‌বি সাহেবের কাছে-ইংরেজী পড়্‌তে আরম্ভ করেন, আর্‌বী পার্শী শিক্ষার অনেক পরে। কিন্তু অল্প দিনে এমন ব্যুৎপত্তি লাভ করেন যে ইংরেজী নবীশরা অবাক্। দেশে কাশী, নবদ্বীপ প্রভৃতি স্থানে অনেক টোল ছিল। তাই সংস্কৃত কলেজ-প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি ক’রে তিনি একখানা চিঠি লেখেন। বিশপ হিবার সেই চিঠি তদানীন্তন