বন্দোবস্ত কর্বার জন্যে আমাদের সচেষ্ট থাক্তে হবে। লাইব্রেরীর যাঁরা প্রতিষ্ঠাতা, এই কার্য্যের ভার তাঁদেরই উপর বিশেষ ভাবে ন্যস্ত রয়েছে। আমার ধারণা পাঠাগারে নভেল যত কম থাকে ততই ভাল। উপন্যাস পাঠের সার্থকতা আছে, এ কথা আমি কখনও অস্বীকার করি না। স্কট, ডিকেন্স, অথবা বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরচ্চন্দ্র প্রভৃতি প্রতিভাশালী লেখকগণের উপন্যাসে অনেক বিচিত্র চরিত্র চিত্রিত হয়েছে। কিন্তু বাঙ্গালী পাঠকসাধারণের মধ্যে ভাবুকতা ও রসগ্রাহিতার অত্যন্ত অভাব। তাঁরা উপন্যাস পাঠে গল্পাংশের অতিরিক্ত কিছু গ্রহণ কর্তে পারেন না। আর সেই কারণেই গভীর ভাবাত্মক কোন বিষয় তাঁদের ভাল লাগে না। লাইব্রেরীতে নানা বিষয়ক উৎকৃষ্ট পুস্তক থাকা চাই; যেমন মহাপুরুষগণের জীবনী, ভ্রমণকাহিনী, ভূগোল, ইতিহাস, ভাবুক লেখকগণের সমাজ, শিক্ষা নীতি সম্বন্ধীয় প্রবন্ধাবলী, কাব্যগ্রন্থ এবং অন্যান্য আবশ্যকীয় পুস্তক। আর থাকা চাই সারগর্ভ প্রবন্ধে পূর্ণ সাময়িক। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় এই যে আজকালকার সাময়িক পত্রিকাগুলি নিতান্ত মামুলি ধরণের হ’য়ে দাঁড়িয়েছে। রাজেন্দ্রলাল মিত্রের “বিবিধার্থ সংগ্রহ” বা অক্ষয়কুমারের “তত্ত্ববোধিনী” অথবা বঙ্কিমের “বঙ্গদর্শনের” মত সাময়িক পত্রিকা আর ত দেখি না। নূতনের মধ্যে এই মাসের “প্রবাসী”তে “মেঘদূতের পক্ষিতত্ত্ব” নামক উপাদেয় প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ইংরেজী সাময়িক পত্রিকা থেকে লোকে Aeroplane বা উড়োজাহাজের ও Arctic exploration বা মেরু সন্ধানের খবরও পায় আর দুঃখ এই, আমাদের বিদ্যালয়েও কেউ ভাল ক’রে এর খোঁজ নেয় না।
“ছাত্রানাং অধ্যয়নং তপঃ,” কথাটা আমি প্রায়ই ব’লে থাকি। আমার দাঁত পড়ে যাচ্ছে, কিন্তু সে কথাটা আমি বুঝতে পারি শুধু