পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অধ্যয়ন ও জ্ঞানলাভ
২৮৫

প্রথম দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণী নেই। লাখ্‌পতি ও সাধারণ লোক সব এক সঙ্গে এক জায়গায় বসে। এণ্ড্রুকার্ণেগী একজন ক্রোড়পতি; পৃথিবীতে সর্ব্বশ্রেষ্ঠ লৌহের মালিক। আমেরিকার পিট্‌স্‌বর্গে তাঁর লোহার কারখানা ছিল। প্রথম বয়সে তিনি খবরের কাগজ রাস্তায় বেচ্‌তেন। তারপর অসাধারণ অধ্যবসায়ের বলে আমেরিকায় অতুল ঐশ্বর্য্যের অধিকারী হন। পরে টাকা রোজ্‌গার ত্যাগ করে অধ্যয়নে শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করেন। তাঁর ব্যবসা এত বড় ছিল যে একজনে নয়—অনেকে প’ড়ে ৯০ কোটি টাকা দিয়ে সেই ব্যবসাটি কিনেছেন; তাঁর বাৎসরিক আয় হচ্চে সাড়ে চারকোটি টাকা। তিনি শ্রমজীবীদের জন্যে আমেরিকা ও স্কটল্যাণ্ডের অনেক সহরে বিনাব্যয়ে অধিগম্য পাঠাগার স্থাপন করেছেন। মজুরগণ সন্ধ্যার পর যখন অবসর পায় তখন ঐ সমস্ত লাইব্রেরীতে নানাপ্রকার উৎকৃষ্ট পুস্তক পাঠ ক’রে আত্মোন্নতি সাধন করে। কার্ণেগী এখনও (এই বছর দু তিন হয়) অনেক বই লিখ্‌ছেন। নাইণ্টিন্থ্ সেঞ্চুরী পত্রিকায় তিনি শ্রমজীবীদের উন্নতি সম্বন্ধে অনেক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। আগেই বলেছি তাঁর আয় ছিল সাড়ে চারকোটি টাকা। আমাদের এই বাঙ্গালা বেহার ও অন্য জায়গার সকল জমিদারের বাৎসরিক আয় জড়িয়ে সাড়ে চারকোটি নয়। এখানকার সকল জমিদারকে একদিকে আর কার্ণেগীকে একদিকে রেখে ওজন কর্‌লে টাকায় তিনিই ভারী হবেন। কিন্তু বিচিত্র কথা এই যে তিনি এখনও পড়েন। ছিলেন “স্ট্রীটবয়”, রাস্তায় কাগজ বেচতেন, কেবল স্বাবলম্বনের জোরে লক্ষ্মীসরস্বতীর বরপুত্র হয়েছেন।

 তোমরা অনেকেই ইউনিভারসিটির ফার্স্ট সেকেণ্ড হও; সেটা ভাল; কিন্তু আমাদের দেশের অপযশ। কারণ পাশের পর তোমরা