পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৩৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০৪
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

“আমাদের ধর্ম্ম গিয়াছে ছুঁৎমার্গের মধ্যে। আপনি উপপত্নী রাখুন, যত পাপ করুন ছাই চাপা দিলে সব চুপ।” এই ত মেদিনীপুর। এখানকার বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহ সমর্থন করিয়া গিয়াছেন। কিন্তু তাঁহার বিলাপে কে কান দিল? কেনা জানে সমাজ পাপে কলুষিত হইয়াছে। আর আপনি ৬৫ বৎসর বয়সে ১০।১২ বৎসরের বালিকাকে বিবাহ করিলেন সে বিধবা হইয়া কি নির্জলা একাদশী করিবে? এই যে পাপ, ইহা কি সহ্য হয়? তাই বলি সমাজ সংস্কার দরকার, শিক্ষা সংস্কার দরকার, ধর্ম্মসংস্কার দরকার, যাবতীয় কুসংস্কার দূর করা দরকার।

 উপসংহার—

 আজ আমার বড় শুভদিন। আপনাদের সকলকে এক সঙ্গে পাইয়াছি। আমার নিকট হিন্দু নাই, মুসলমান নাই, মাহিষ্য নাই, এক বাঙ্গালী, এক রক্ত, এক বাঙ্গালার মাটী, বাঙ্গালার জল, বাঙ্গালার বায়ুতে সকলেই পরিপুষ্ট। আমরা সকলেই ভাই। আমরা সকলেই এক। মনে পড়ে কেবল মহাত্মার সেই অদ্ভুত বাণী যাহার স্পর্শে এত লোক নবজীবন লাভ করিয়া ধন্য হইয়াছে। আপনাদের নিকট আজ করযোড়ে প্রার্থনা করি এই যে ১০।১২ জন যুবক বিদেশে না গিয়া দেশের জন্য জীবন আহুতি দিয়াছেন এই জাতীয় বিদ্যালয় যদি তাঁহাদের এত বড় ত্যাগ স্বীকার সত্ত্বেও না বাঁচে তাহা হইলে আমি বলিব বঙ্গমাতা তুমি চিরদিনই হতভাগিনী। আমি আপনাদের নিকট প্রার্থনা করি আপনারা এই জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সহিত একটী জাতীয় বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করিয়া ইহাকে একটী আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করুন। বাঙ্গালীর জাতীয় জীবনে গঙ্গার বন্যা আসিয়াছে। আসুন এই শুভমুহূর্ত্তে পাল তুলিয়া স্বরাজের পথে যাত্রা করি।